
ইসলাম শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করেছে এবং মালিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। ইসলামে মালিক-শ্রমিকের মাঝে কোনো শ্রেণীবৈষম্য নেই, বরং সবাই আল্লাহর বান্দা হিসেবে সমান। বিদায় হজের ভাষণে মহানবী (সা.) এই সমতার ওপর জোর দিয়েছেন, যেখানে তিনি বলেন, কোনো জাতির ওপর অন্য জাতির শ্রেষ্ঠত্ব নেই, শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি কেবল আল্লাহভীতি ও তাকওয়া।
ইসলাম শ্রমিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব মালিকের ওপর অর্পণ করেছে। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মালিকানাধীন ব্যক্তির জন্য খাবার ও কাপড়ের অধিকার রয়েছে।
ইসলাম শ্রমিকদের বেতন ও পারিশ্রমিক দ্রুত পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে। হাদিসে এসেছে, “শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।” (ইবনে মাজাহ, ২৪৪৩০)।
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও শ্রমিকের পাওনা প্রদানে টালবাহানাকে ইসলামে বড় অন্যায় হিসেবে দেখা হয়। মহানবী (সা.) বলেছেন, “ধনী ব্যক্তির টালবাহানা অবিচার।” (সহিহ বুখারি, ২২৮৭)।
শ্রমিককে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করাকে এক ভয়ংকর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, “কিয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির বিপক্ষে থাকব... আর একজন সে যে কাউকে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার পর কাজ বুঝে নিয়েছে, কিন্তু তার প্রাপ্য দেয়নি।” (বুখারি, ২২২৭)।
এছাড়া, তিনি আরও বলেন, “যে জাতির দুর্বল লোকেরা জোরজবরদস্তি ছাড়া তাদের পাওনা আদায় করতে পারে না, সেই জাতি কখনো পবিত্র হতে পারে না।” (ইবনে মাজাহ, ২৪২৬)। এই হাদিসগুলো প্রমাণ করে যে, শ্রমিকের মজুরি পরিশোধে অবহেলা করা বা টালবাহানা করা ইসলামে মারাত্মক অপরাধ, যার জন্য পরকালে কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে।
Comments