
জুমাবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে বিবেচিত। আরবি 'জুমুআহ' শব্দের অর্থ একত্রিত হওয়া বা কাতারবদ্ধ হওয়া। জুমার দিনে জোহরের নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করা হয়, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। পবিত্র কুরআনে 'জুমা' নামে একটি সম্পূর্ণ সূরা নাজিল হয়েছে, যা এই দিনের মাহাত্ম্য প্রমাণ করে।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, "হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝ।" (সূরা জুমা, ৬২:৯)
বিভিন্ন হাদিসে জুমার দিনের একাধিক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে:
সৃষ্টি ও কিয়ামত: হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, "সূর্য উদিত হয় এমন সকল দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমুআর দিন। এই দিনেই আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এদিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে, এই দিনেই তাঁকে তা থেকে বের করা হয়। আর এই জুমুআর দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে।" (সহিহাহ ১৫০২, সহিহ আবু দাউদ ৯৬১)
মসজিদে আগমনের সওয়াব: রাসূল (সা.) বলেছেন, "যখন জুমার দিন আসে, ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দপ্তর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।" (বুখারি, হাদিস ৮৮২)
বিশেষ আমলের সওয়াব: হযরত আউস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করবে, হেঁটে মসজিদে আসবে, ইমামের কাছাকাছি বসবে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনবে, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছর নফল রোজা ও এক বছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।" (আবু দাউদ, হাদিস ৩৪৫)
দোয়া কবুলের সময়: হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, "জুমার দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আসরের শেষ সময়ে তা তালাশ করো।" (আবু দাউদ, হাদিস ১০৪৮, নাসাঈ, হাদিস ১৩৮৯)
Comments