Image description

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেছেন, ২৮টি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না এবং এটি একটি ‘আমি-ডামি’ নির্বাচনের মতো হবে। এমন পদক্ষেপ গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক নজির স্থাপন করবে এবং দেশে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি করতে পারে। সম্প্রতি একটি ভিডিও বক্তৃতায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।

মোস্তফা ফিরোজ- সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, “বিগত নির্বাচনে ২৮টা দল অংশগ্রহণ করেছে। এতগুলো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে যে নির্বাচন হবে, সেটা কি গ্রহণযোগ্য হবে? তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে কীভাবে? এটা তো আরেক অর্থে আমি-ডামি নির্বাচনের মতো হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করছে জামায়াত-বিএনপি। তারা নিজেরা নিজেরা লড়াই করবে।”

তিনি আরও বলেন, “একটা যুক্তি দেওয়া হচ্ছে ফ্যাসিবাদের দোসর। কিন্তু ভেতরের যুক্তিটা হলো, প্রতিদ্বন্দ্বী যতগুলো সরানো যায়, তাহলে নির্বাচনে লড়তে আরও সুবিধা হবে। তারা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী রাখতে চাচ্ছে না। যাতে নিশ্চিন্তে সেকেন্ড পজিশন বা ফার্স্ট পজিশনে চলে যেতে পারে। ফলে ২০-২৫ বা ৩০ শতাংশ আওয়ামী লীগ বা তাদের সমর্থকদের যে ভোট আছে, সেই ভোটার যাতে ভোট না দিতে পারে। আর দিলেও যাতে সেই ভোটের ভাগীদার তারা হতে পারে।”

সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “নিষিদ্ধ যদি চাইতেই হয়, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে ২৮টা দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা দলকে নিষিদ্ধ চাইতে হবে। তাহলে নির্বাচনটা কাদেরকে নিয়ে হবে? এ দেশে যারা রাজনৈতিক দলসমূহের নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চাচ্ছে এই দাবির মধ্য দিয়ে, তারা যদি পরে বলে আমরাও নির্বাচন করব না, তাহলে এ দেশে নির্বাচন কী হবে? তাদের এই দাবির পেছনের উদ্দেশ্য ভিন্ন হতে পারে। নিজেদের অতিরিক্ত সুবিধা সৃষ্টির জন্য হয়তো তারা আরও অনেক রাজনৈতিক দলের নিষিদ্ধ কামনা করতে পারে।”

মোস্তফা ফিরোজ আরও উল্লেখ করেন, “রাজনৈতিকভাবে মতানৈক্যের মধ্যে বিএনপি বলছে, নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হলে এটা একটা বিপজ্জনক নজির হিসেবে দাঁড়াবে। ভবিষ্যতে ৫-১০ বছর পর এটা রেফারেন্স হিসেবে কাজ করবে, যেটা গণতন্ত্রের জন্য একটা অশনিসংকেত।”

তিনি সালাহউদ্দিন আহমদের আরেকটি উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, “দেশে যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত না হয় এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে দেশে একটা সাংবিধানিক শূন্যতা বিরাজ করবে। সেই শূন্যতার মধ্যে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে পতিত ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে। তাদের হাত ধরে আঞ্চলিক শক্তিগুলো এখানে জড়িত হয়ে যেতে পারে। পরস্পরের বিরুদ্ধে একটি বৈশ্বিক শক্তিও সেই সুযোগটা নিতে পারে।”

মোস্তফা ফিরোজের এই বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি মনে করেন, বড় রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং এটি দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে।