Image description

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুরহাটেও বইছে ভোটের হাওয়া। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে। উৎসবের আমেজ ফিরেছে পাড়া-মহল্লায়। দীর্ঘ দেড় দশক পর পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে পারার স্বপ্নে বিভোর ভোটাররা। জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি উপজেলা নিয়ে গঠিত জয়পুরহাট-১ আসন। 

এ আসনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামির প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে অনেক আগেই। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছেন দলটি। বিএনপি চায় তাদের হারানো আসনে সগৌরবে ফিরতে। অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামিও শক্তও অবস্থানে। তারাও এ আসন ছাড় দিতে নারাজ।

জয়পুরহাট-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামির এমপি প্রার্থী হিসেবে চুড়ান্ত হয়েছে জেলা জামায়াতের আমির ডাঃ মোঃ ফজলুর রহমান সাঈদ। অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির দলীয় মনোনয়ন চাইছেন অনেকেই। তবে এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে জোরালো প্রচারণায় দেখা গেছে তিনজনকে। তারা হলেন-বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ ফয়সাল আলীম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মাসুদ রানা প্রধান ও পাঁচবিবি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য এম এ গফুর মন্ডল। 

জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত  জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রার্থী এই আসনের বিজয়ী হতে পারেনি। তবে এবারের নির্বাচনে এই আসনে বিজয়ী হয়ে অঘটন ঘটানোর স্বপ্ন বুনছেন জামায়াতের দলীয় নেতা-কর্মীরা। একসময় জয়পুরহাট জেলা বিএনপির দূর্গ বলে পরিচিতি ছিল। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জয়পুরহাট-১ আসন বিএনপির দখলে ছিল। এরপর থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া দল আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী মোজাহার আলী প্রধান নির্বাচিত হন। মোঃ মোজাহার আলী প্রধান মারা গেছেন।  তিনি জেলা বিএনপির সভাপতিও ছিলেন। সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মোজাহার আলীর প্রধানের ছেলে মাসুদ রানা প্রধান এখন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের পদে আছেন। তিনিও এবার দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।

জামায়াতে ইসলামীর দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাট-১ আসনে  দলীয় প্রার্থী জেলা আমীর ডাঃ ফজলুর রহমান সাঈদ। এ আসনে দলটি নির্বাচনী প্রস্তুতি শেষ করেছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি থেকে পোলিং এজেন্টের তালিকাও শেষ করা হয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, যদি একমাসের মধ্যেও তফসিল দিয়ে নির্বাচন করা হয় তাহলেও তাঁদের কোন সমস্যা হবে না। এখন তাঁরা এ আসনের  নির্বাচনের পুরাপুরি প্রস্তুত রয়েছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে তাঁরা এই আসনে বিজয়ী হবেন বলে আশা করছেন।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত একাধিক ব্যাক্তি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজ-নিজ নির্বাচনী এলাকায় অনেক আগে থেকেই গণসংযোগ ও দলীয় প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। দলটির নেতা-কর্মীরা বলছেন, জয়পুরহাট জেলা বিএনপির দূর্গ। এখনো সেই দূর্গ অটুট রয়েছে বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন। একতরফা ও রাতের ভোটে বিএনপির আঘাত হেনেছিল ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগ। এবারের নির্বাচনে এই আসনে জয়লাভের মাধ্যমে বিএনপির হারানো গৌরব স্বরুপে ফিরে আসবে বলে আশা করছেন তাঁরা।