Image description

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার নাগরবন্দর-পিরব সড়কের বিভিন্ন স্থানে হয়ে আছে বড় বড় গর্ত, জমে আছে পানি। উঠে গেছে সড়কের পিচ ঢালাই। এমতাবস্থায় সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। লাগাতার কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কের অবস্থা আরও বেহাল হয়ে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবহন ও যাত্রীরা। মাঝে মধ্যেই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। এছাড়াও সড়ক বেহাল হওয়ার কারণে মাঝে মধ্যেই সংঘটিত হচ্ছে ডাকাতি। এ কারণে সন্ধ্যা নামলেই যাত্রী ও যানবাহন চালকদের মনে বিরাজ করে আতঙ্ক।

বর্তমানে এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ শত শত যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু সড়কটি চলাচলের পুরো অনুপযোগী হওয়ায় যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার শঙ্কা করা হচ্ছে।

শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নাগরবন্দর-পিরব সড়কের সংসারদিঘী এলাকার পুলিশ বক্স থেকে কামতারা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন যাবত সংস্কারহীন থাকায় পুরো সড়কজুড়ে ছোট ছোট খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে সেই ক্ষত আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে পুলিশ বক্সের পরে সড়কে কয়েকটি গর্ত বড় আকার ধারণ করেছে। সেখান দিয়ে ছোট-বড় যানবাহনগুলোকে পারাপারে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। মূলত সংস্কারের অভাবে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সড়কের বেহাল দশার কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাত্রীদের এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা অটোভ্যান থেকে পড়ে আহত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। ছোট বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহনগুলোকে চলতে হচ্ছে এঁকেবেঁকে হেলেদুলে। যা চালকদের জন্য অস্বস্তিকর। রোগী নিয়ে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা অনেকটা অসম্ভব।

নাগরবন্দর-পিরব সড়কটি পিরব ও বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নবাসীদের জন্য শিবগঞ্জে যাতায়াতের অন্যতম প্রধান সড়ক। শিবগঞ্জে রয়েছে থানা, ইউএনও অফিস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর, উপজেলা ভূমি অফিস, বিভিন্ন ব্যাংক, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যালয়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান। পিরব ও বুড়িগঞ্জ ইউনিয়ন থেকে শিবগঞ্জে এসব প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে আসা মানুষদের প্রতিনিয়ত পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী কয়েকজন যাত্রী জানান, সড়কটি শিবগঞ্জের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। এত গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখন পর্যন্ত সংস্কার না করায় টানা বৃষ্টিতে পুরো সড়কটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই কষ্টের অবসান কবে ঘটবে জানা নেই তাদের। অতিদ্রুত সড়কটির সংস্কার দাবি করছেন তারা।

অটোরিকশা চালক তোরাব হোসেন জানান, সড়কের দুরাবস্থার কারণে বড় যানবাহনগুলো কোনোভাবে চলাচল করতে পারলেও তাদের অটোরিকশা নিয়ে এই সড়কে চলাচল করা অসাধ্য ব্যাপার। অধিকাংশ সময় অটোরিকশা হেলে গিয়ে এক্সেল ভেঙ্গে যায়, স্প্রোগ কেটে যায়। এছাড়াও অটোরিকশার অনেক ক্ষতি হয়, যা ঠিক করতে অনেক টাকা লাগে। তিনি আরও জানান, রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে এখানে মাঝে মধ্যেই ঘটছে ডাকাতি। গত বৃহস্পতিবার রাতে একজনের মোটরসাইকেল ছিনতাই করেছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মানবকণ্ঠকে বলেন, "সংস্কারের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে চাইলেই তো আর নেয়া যায় না। টাকা পয়সা লাগে। তবে আমাদের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। অনুমোদন হলেই কাজ হবে।"