Image description

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচনে ক্রিকেটার তামিম ইকবালের কাউন্সিলরশিপের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, গতকাল নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অভিযোগকারী উপস্থিত ছিলেন না। ফলে তামিমের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়নি এবং তার নির্বাচনে অংশগ্রহণে আপাতত কোনো বাধা নেই।

তবে এই স্বস্তিতেও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছেন না তামিম। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুনানি শেষে গণমাধ্যমের সামনে তিনি নিজের কাউন্সিলরশিপ বাতিল হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

বিসিবির নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর গত বুধবার মোট ৩৮টি অভিযোগ জমা পড়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এর মধ্যে আটটি এসেছে ইমেইলে। সেই আটটির একটি ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের কাউন্সিলর তামিমের বিরুদ্ধে।

কানাডা প্রবাসী সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহর স্বাক্ষরিত অভিযোগে দাবি করা হয়, আইসিসি স্বীকৃত ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর না নেওয়ায় বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তামিম কাউন্সিলর হতে পারেন না। তামিম ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের কেউ নন বলেও দাবি করা হয়।

যদিও হালিম শাহ নিজেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, এই ধরনের কোনো অভিযোগ তিনি করেননি, এমনকি এ বিষয়ে কিছু জানেনও না। তার পরও শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না তামিম।

গতকাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনের সামনে আপত্তির শুনানিতে অংশ নেওয়ার পর সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘আমি ভয়ডরহীনভাবেই (ফিয়ারলেস) চেষ্টা করছি। প্রেশার (চাপ) আমার ওপর অনেক আছে। কালকে আমার কাউন্সিলরশিপও বাতিল হয়ে যেতে পারে। কোর্টে রিটও হয়ে যেতে পারে, কোর্টে মামলাও হয়ে যেতে পারে। কেন হতে পারে, সেটা আপনারা খুব ভালো করেই বোঝেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে আমার নামে অভিযোগ করেছে, সেই বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াচ্ছে যে সে করে নাই। এটা আসলে কে লিখেছে, সেটা আমিও জানি। এসব করার আগে আমাকে বলে দেওয়া হচ্ছে কিন্তু যে এ রকম করা হবে তোমার বিরুদ্ধে। আমি যে অরগানাইজার (সংগঠক) না, সেটা কেউ প্রমাণ করতে পারবে? ৩টা দলের মালিক আমি, ২টি দলের কমিটিতে আছি। ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের কমিটি খুঁজে বের করে দেখুন, আমি আছি কী নাই। আমার এটা লজ্জা লাগছে যে আজকে আমার এই জায়গায় এসে এই জিনিসগুলো ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে।’ 

সাবেক ক্রিকেটারের কোনো ব্যাখ্যা বিসিবির গঠনতন্ত্রে নেই বলেও দাবি করেন তিনি। ‘সি’ ক্যাটেগরিতে কাউন্সিলর হওয়া মোহাম্মদ আশরাফুল ও বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের উদাহরণও দেন তিনি। ওল্ড ডিওএইচএসের কাউন্সিলর হলেও তামিম শুনানিতে এসেছিলেন গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের সহসভাপতি হিসেবে।

দুদকের পর্যবেক্ষণে যে ১৫টি ক্লাবকে খসড়া ভোটার তালিকায় রাখা হয়নি গুলশান তার একটি। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনাও তুলে ধরেন তামিম, ‘আমি ওনাদের স্পষ্টভাবে বলেছি যে দেখেন, এখানে ১৫টি ক্লাবের চেয়ে বড় বিষয় হলো আপনারা যে সিদ্ধান্তটি নিতে যাচ্ছেন, আপনার ৩০০ ক্রিকেটারের কথা মাথায় রাখতে হবে। এই ১৫টি ক্লাব নিয়মিত ক্রিকেট খেলে, খেলোয়াড়দের পেমেন্ট করে। এই খেলোয়াড়দের পরিবারও এর সঙ্গে জড়িত।’

বিসিবির নির্বাচন নিয়ে নোংরামির অভিযোগ আগেই করেছিলেন তামিম। গতকাল আবার সে কথা বলেন তিনি, ‘জিনিসগুলো কেন করা হচ্ছে, নির্বাচনে একটা পক্ষকে দুর্বল করার জন্য, এটা সবাই জানে। এত খারাপ সময় এসে গেল যে জেতার জন্য আপনারা ৩০০ ক্রিকেটারের জীবনের সঙ্গে খেলা শুরু করলেন! আমি সিনিয়রদের কাছে শুনেছি, ক্রিকেট বোর্ডের ইতিহাসে কোনো দিন এত নোংরামি তারা দেখেননি।’