Image description

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন জনপ্রিয় বক্তা ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মুফতি আমির হামজা। এই ঘটনায় জামায়াতে ইসলামী তাকে সতর্ক করেছে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, আমির হামজার বক্তব্যটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই জামায়াত তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। তবে তখন আমির হামজা চট্টগ্রামে অবস্থান করায় জামায়াতের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা তার সঙ্গে বসতে পারেননি।

গত ২২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ফেরার পর হামজাকে নিয়ে জামায়াতের একটি শীর্ষ পর্যায়ের দল বৈঠক করে। এই দলের নেতৃত্ব দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারাক হোসাইন। হামজার ব্যাখ্যা শোনার পর মোবারাক হোসাইন তার বক্তব্য সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী জামায়াতের নীতিনির্ধারকদের কাছে জানান। এরপর জামায়াতের পক্ষ থেকে হামজাকে ওয়াজে বিতর্কিত কথা বলার ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে একই ধরনের বক্তব্য দিলে জামায়াত যেকোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে বলেও তাকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারাক হোসাইন বলেন, “উনাকে নিয়ে আমরা বসেছিলাম। তিনি তার ভুল স্বীকার করেছেন। তিনি একথাও বলেছেন যে ইতিমধ্যে তিনি এ ব্যাপারে ক্ষমাও চেয়েছেন। আমরা তাকে বলেছি, আগামীতে এ জাতীয় কন্ট্রোভার্সিয়াল (বিতর্কিত) কথা যদি আমরা শুনি, তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

তিনি আরও বলেন, “এসব ব্যাপারে জামায়াত কাউকে ছাড় দেয় না, দেয়ওনি কোনোদিন। আমির হামজা যেহেতু ভুল স্বীকার করেছেন এবং ক্ষমাও চেয়েছেন, সে হিসেবে তাকে এবারের মতো ছাড় দিয়েছি। তবে তাকে খুব ভালো করেই হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আমির হামজা তার এক ওয়াজে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে এই ১৬ বছর আজান দিতে দেয়নি জালেমরা। ছাত্রলীগের ভাইদের নাকি ঘুমের ডিস্টার্ব হবে, এ জন্য ফজরের আজান হইতো না। এবার ডাকসুতে শিবির প্যানেল পাস করার পরের দিন মাইকে আজান আরম্ভ হয়েছে।’ তার এমন বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা এই বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এছাড়াও, মুফতি আমির হামজা নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দাবি করে এক ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করে এবং ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটায়।

তার এ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমির হামজা তার বক্তব্যে দাবি করেছেন, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন এবং আবাসিক হলে সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করতে দেখেছেন। তিনি আরও বলেছেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটায়। প্রকৃতপক্ষে তার কোনো বক্তব্যই সত্য নয়।