Image description

পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ির গুইমারায় সেনাবাহিনীর ওপর বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান। এক বিবৃতিতে তারা বাংলাদেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার জন্য সরকারের প্রতি জোরালো দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে হেফাজত নেতারা বলেন, “আমরা খাগড়াছড়ির গুইমারায় সেনাবাহিনীর ওপর ইউপিডিএফ-এর সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।” তারা উল্লেখ করেন, গত কয়েক দিন ধরে খাগড়াছড়িতে বিচারের দাবির নামে পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর স্থাপনা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর চলছে। এছাড়া, কর্তব্যরত সেনাসদস্যদের ওপর একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটেছে।

নেতারা জানান, সেনাবাহিনী যথেষ্ট ধৈর্য ও সংযমের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও ইউপিডিএফ-এর মতো সশস্ত্র গোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তি সৃষ্টি করছে। তারা অভিযোগ করেন, “ইন্ডিয়ার ভাড়াটে সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ এবং দেশের কিছু ইন্ডিয়াপন্থী বাম গোষ্ঠী পাহাড়ে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”

হেফাজত নেতারা আরও বলেন, ইউপিডিএফ-সহ অন্যান্য পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী তৎপরতার পাশাপাশি অপহরণ, চাঁদাবাজি, গুম, খুন এবং মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় বাঙালি ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী উভয়ই অতিষ্ঠ। তারা অভিযোগ করেন, ইন্ডিয়ার মদদপুষ্ট এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো স্থানীয় বাঙালি ও নৃতাত্ত্বিক নাগরিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং সেনাবাহিনীকে ‘শত্রু’ হিসেবে চিহ্নিত করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থানীয় বাঙালি ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাদের মধ্যে কোনো বিভেদ বা বিদ্বেষ প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। ইউপিডিএফ-এর মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোকে ‘দেশদ্রোহী’ হিসেবে ঘোষণা করে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্র প্রণয়ন করা এখন সময়ের দাবি।”

হেফাজত নেতারা বাংলাদেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি জোরালো দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে ‘খ্রিস্টান রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র বহুদিনের পুরনো। এই ষড়যন্ত্র রুখতে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতা সেনাবাহিনী ও বিজিবির পাশে রয়েছে।”

তারা আরও জানান, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনী ও বিজিবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে হেফাজতে ইসলাম। তারা এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।