Image description

লালমনিরহাটের-১ (পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা) আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন শিহাব আহমেদ। এক সময়ের সবজি বিক্রেতা থেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা এই ব্যক্তিত্ব গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে এক মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে তার নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছেন।

নির্বাচনী কার্যক্রমের উদ্বোধন

শিহাব আহমেদের নির্বাচনী শোভাযাত্রা হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতার দোয়ানী মোড় থেকে শুরু হয়ে পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা, আলাউদ্দিন নগর, কবরস্থান, সরকারি কলেজ মোড়, রেলগেট, পশ্চিম চৌরঙ্গী মোড়, ঘুন্টি, বুড়িমারী বাজার ও স্থলবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তিনি স্থানীয় বাজারগুলোতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে তার উন্নয়ন ভাবনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ভোটারদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “জনগণই আমার শক্তি। আমি তাদের দোরগোড়ায় থেকে আস্থা অর্জন করতে চাই। আমি এদেশকে দিতে এসেছি, নিতে নয়।”

উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি

শিহাব আহমেদ তার বক্তব্যে জানান, তিনি ইতিমধ্যে ৫০০-এর বেশি যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। তার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় বেকারত্ব দূর করা। তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দেন, নির্বাচিত হলে জনগণের সকল উন্নয়ন কার্যক্রম স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হবে।

শিহাব আহমেদের জীবনযাত্রা

শিহাব আহমেদ হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজের ছেলে। শৈশবে মা হারানোর পর তিনি নানীর কোলে বেড়ে ওঠেন। জীবনের শুরুতে সবজি বিক্রি, ট্রাকের হেলপার এবং রিকশা চালানোর মতো কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যান। তার অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেন। এরপর স্থানীয়দের সহযোগিতায় রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে তুরস্কে স্কলারশিপের সুযোগ পান।

তুরস্কের গেবজে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি নির্মাণ শ্রমিক, হোটেলের ডিশ ওয়াশারসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এভাবে ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলেন।

ব্যবসায়িক সাফল্য

২০১৮ সালে তুরস্কে মোবাইল ফোন এক্সেসরিজ ব্যবসা শুরু করেন শিহাব। বর্তমানে তিনি তুরস্কে রিয়াল এস্টেট, কনস্ট্রাকশন, ট্যুরিজম ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা এবং দুবাইয়ে শিহাব গ্রুপ অফ কোম্পানির আওতায় প্রাইভেট গাড়ির শোরুম, গাড়ি ভাড়া এবং আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এছাড়া আফ্রিকায় ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন এন্ড কনস্ট্রাকশনসহ দেশ-বিদেশে তার প্রায় ১৩টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে লড়াই

শিহাব আহমেদ যে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন, সেখানে ইতিমধ্যে জামায়াত সমর্থিত হেভিওয়েট প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম রাজু, বিএনপি সমর্থিত হাসান রাজিব প্রধান, এবি পার্টির আবু রাইয়ান আশয়ারী রছি, সায়েদুজ্জামান কোয়েল ও শাহীন আকন্দ নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এই প্রতিযোগিতামূলক আসনে শিহাব আহমেদের প্রার্থিতা নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

জনগণের প্রত্যাশা

শিহাব আহমেদের সাধারণ জীবন থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার প্রতিশ্রুতি ও উন্নয়ন পরিকল্পনা ভোটারদের মনে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী নির্বাচনে তার পথচলা কতটা সফল হবে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।