Image description

বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির দাবি ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল সোমবার (১৩ অক্টোবর) থেকে সারাদেশের সব বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট।

রোববার (১২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি থেকে জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী এই ঘোষণা দেন। এর আগে শিক্ষকরা সোমবারের মধ্যে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা থাকলেও, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ এবং কয়েকজন শিক্ষককে আটকের ঘটনায় এই কর্মসূচি একদিন এগিয়ে আনা হয়।

প্রেস ক্লাবের সামনে উত্তেজনা ও পুলিশের হামলা

রোববার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এতে পল্টন থেকে হাইকোর্টের কদম ফোয়ারা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমের নেতৃত্বে পুলিশ শিক্ষকদের রাস্তা ছেড়ে শহীদ মিনারে যাওয়ার জন্য পাঁচ মিনিটের আলটিমেটাম দেয়। ডিসি মাসুদ আলম বলেন, “আপনারা শহীদ মিনারে চলে যান। পাঁচ মিনিট পরে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। আপনাদের নেতৃবৃন্দ শহীদ মিনারে চলে গেছেন। রাস্তা অবরোধ করবেন না।”

কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষকদের একাংশ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা না ছাড়ার ঘোষণা দিলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান ও লাঠিচার্জ করে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে এবং কয়েকজন শিক্ষককে আটক করে। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়।

শিক্ষকদের দাবি ও সরকারের প্রতিশ্রুতি

গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে শিক্ষক সমাবেশে শিক্ষা উপদেষ্টা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, ১৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা এবং কর্মচারীদের উৎসবভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। উল্টো গত ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে অর্থ মন্ত্রণালয় মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

কর্মবিরতির প্রভাব

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের ডাকা এই কর্মবিরতি সারাদেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। এতে শিক্ষার্থীদের পঠনপাঠন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শিক্ষক নেতারা সরকারের কাছে অবিলম্বে দাবি মেনে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায়, আন্দোলন আরও জোরদার করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।