Image description

হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার হাওরাঞ্চল বেষ্টিত শিবপুর গ্রাম ও এর আশেপাশে হাওর ভারচর, দশকামান্না এবং ধলেশ্বরী নদীতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ইনভার্টারের সাহায্যে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ শিকারের এক মারাত্মক প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবৈধ উপায়ে মাছ ধরায় অসংখ্য চক্রের সদস্য জড়িত। এর ফলে কেবল মাছই নয়, অন্যান্য প্রাকৃতিক জলজ সম্পদও ধ্বংসের মুখে পড়েছে। এভাবে মাছ শিকার অব্যাহত থাকলে এ অঞ্চলের অন্যান্য জলজ প্রাণীও বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন উপজেলাবাসী।

এই ভয়ানক পদ্ধতিতে কয়েকটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারির সাহায্যে পানিতে সাময়িক বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। বৈদ্যুতিক শকের কারণে একটি নির্দিষ্ট এলাকার সকল প্রকার জলজ প্রাণী, বিশেষ করে রেণু মাছ থেকে শুরু করে অন্যান্য জলজ প্রাণীও মরে পানির উপরে ভেসে ওঠে। অসাধু জেলেরা তখন জাল দিয়ে এসব মাছ নৌকাতে সংগ্রহ করে নেয়।

সংগৃহীত এই মাছগুলো লাখাই বাজার ও নাসিরনগর আড়তে বিক্রি করা হয়। স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে মাছ শিকারের কারণে তাঁরা এখন বেড় জালে আগের মতো মাছ পাচ্ছেন না। এর ফলে এ উপজেলায় দেশি মাছের প্রাচুর্য উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে এবং ইতিমধ্যে বেশকিছু দেশি প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

লাখাই ইউনিয়নের নদী ও বিলগুলোতে বিদ্যুৎশক দিয়ে মাছ শিকারের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক তার, এলইডি বাল্বসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই কাজে নিয়োজিত ৫০ থেকে ৬০ টি নৌকা রয়েছে। এসব নৌকার মাঝিরা সারারাত মাছ শিকারের পর কেউ বিশ্রাম নিচ্ছেন, আবার কেউবা মাছ বিক্রি করতে চলে যাচ্ছেন। প্রতিদিন এই শিকারিরা ইলেকট্রিক শক দিয়ে ৬ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত ছোট মাছ ধরে থাকে।

লাখাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কোনিক চন্দ্র শর্মা এই মাছ শিকার পদ্ধতিকে 'ভয়াবহ' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং ক্ষতিকর দিক নিয়ে জেলেদের সাথে আলোচনা করতে হবে। তিনি বামৈ একটি সচেতনতামূলক সভাও করেছেন। এর পাশাপাশি, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে অসাধু জেলেদের আটক করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলবেন।