
বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায়, বিশেষত রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পদক্ষেপের ফলে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ায় নতুন করে এর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে স্পট মার্কেটে গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ১১৪ ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের দিনের তুলনায় ০.৫ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, বুধবার গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সোনার বাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছিল।
ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিউচার মার্কেটে সোনার দাম ১.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ১২৮.৪০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন চীনের বিরুদ্ধে নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা বিবেচনা করছে, যার মধ্যে সফটওয়্যারচালিত বিভিন্ন পণ্য যেমন ল্যাপটপ ও জেট ইঞ্জিনের মতো সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এটিকে চীনের সাম্প্রতিক বিরল খনিজ উপাদান রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথমবারের মতো রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, যা দেশটির তেল কোম্পানি লুকওয়েল ও রোসনেফটকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম প্রায় ৫৭ শতাংশ বেড়েছে এবং গত সোমবার তা ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ ডলারে পৌঁছায়। সুদের হার কমানোর আশঙ্কা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারাবাহিক সোনা কেনা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এই মূল্য বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
বাজারে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহের ফেড বৈঠকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত প্রায় নিশ্চিত। সাধারণত, কম সুদের পরিবেশে আয়বিহীন সম্পদ হিসেবে সোনার দাম বৃদ্ধি পায়।
ইউবিএসের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা মার্ক হ্যাফেলি এক নোটে বলেন, "আমরা সোনাকে একটি কার্যকর পোর্টফোলিও ডাইভারসিফায়ার হিসেবে দেখি। যদি বৈশ্বিক রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তবে সোনার দাম ৪ হাজার ৭০০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।"
অন্যদিকে, স্পট মার্কেটে সিলভার বা রুপার দাম প্রতি আউন্সে ১.৩ শতাংশ বেড়ে ৪৯.১৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। প্লাটিনামের দাম এক হাজার ৬৪৩ ডলার ও প্যালাডিয়ামের দাম এক হাজার ৪৫৬ ডলারে রয়েছে।
Comments