বরগুনার বামনা উপজেলায় সরকারের খাদ্যবন্ধু কর্মসূচির আওতায় দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত সুলভমূল্যের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ডিলার মাহমুদুল হাসান রুবেল এবং বামনা সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবিরের এই অনিয়মের কারণে নয়জন সাধারণ উপকারভোগী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এই নয়জন ভুক্তভোগী হলেন— মো. জামাল আকন, আলতাফ হোসেন, শহিদুল আলম, আলতাফ হোসেন খান, মো. ইউনুস খান, মো. ফোরকান, মো. খলিল আকন, বিধান চন্দ্র রায় এবং মো. নুরুল ইসলাম। তারা অভিযোগ করেছেন, ডিলার ও প্যানেল চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তারা তাদের ন্যায্য প্রাপ্য চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন।
ঘটনার বিবরণ অনুসারে, গত ২৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টায় এই অভিযোগ সামনে আসার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মাঠে নামেন বামনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক নয়া দিগন্তের বরগুনা জেলা প্রতিনিধি আবু নাসের গোলাম কিবরিয়া এবং দৈনিক সাগকুলের বার্তা সম্পাদক ও বামনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিনসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে এবং দেখা গেছে, এই নয়জন সাধারণ ভোক্তা সত্যিই হয়রানির শিকার হয়েছেন।
দ্রুত হস্তক্ষেপের ফলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ভুক্তভোগীদের চাল উদ্ধার করে তাদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ডিলার মো. মাহমুদুল হাসান রুবেল বলেন, “খাদ্য অফিস থেকে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে তাদের নাম নেই। তাই চাল দেওয়া হয়নি।”
কার্ডে ‘বাদ’ লিখে দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানান, “প্যানেল চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মোবাইলে বলেছেন, তাদের নাম বাদ দিতে এবং তারা আর চাল পাবেন না। তাই আমি কার্ডে বাদ লিখে দিয়েছি।”
বামনা উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. কাজী মো. গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “আমি অফিসের কাজে বাইরে আছি। বিষয়টি আমার সহকারীকে পাঠিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।” পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে অফিস সহকারী মোসা. রুবি বেগম উপস্থিত হয়ে সত্যতা যাচাই করেন এবং অফিস থেকে নামের তালিকা বের করে চালের ব্যবস্থা করেন। তিনি জানান, “ভুলবশত এই তালিকাটি প্রিন্ট হয়নি।”
ভুক্তভোগী মো. জামাল আকন বলেন, “আমাদের অনেক হয়রানি করা হয়েছে। অনেকে চাল না পেয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন, পরে খবর পেয়ে গাড়িভাড়া দিয়ে আবার চাল নিতে এসেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যে হয়রানির শিকার হয়েছি, তার সুষ্ঠু তদন্ত করে এই ডিলারকে বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।”




Comments