বরগুনার আমতলীতে ফাজিল তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে ৯ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতদের মধ্যে ৮ জন ছাত্রী এবং ১ জন ছাত্র। শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার বন্দর হোসাইনিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

বহিষ্কৃতরা হলেন—জান্নাতি, তানিয়া, মাহফুজা, তানিয়া, সাদিয়া, জুলেখা, রুমা, লামিয়া ও জাকারিয়া।

জানা যায়, কেন্দ্রটিতে ফাজিল তৃতীয় বর্ষের মোট ৭৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। গত ২৫ অক্টোবর থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষা শুরুর পর থেকেই ওই কেন্দ্রে নানা অনিয়ম চলছিল। কেন্দ্র প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকার ফ্যাসিলিটেটর মো. মাইনুল ইসলাম দায়িত্বে থাকলেও তিনি অনিয়ম রোধে কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা। শনিবার বিকেলে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের পরীক্ষা চলাকালে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খান কেন্দ্রটি পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি মেয়েদের কক্ষে কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে বই খুলে পরীক্ষা দিতে দেখতে পান। পরে ইউএনও ৯ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেন। ঘটনার পর ওই কক্ষের পরিদর্শক, ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের প্রভাষক জাকিয়া বেগমকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।

কেন্দ্র প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়েদের কক্ষ থেকে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হলেও মেয়েদের কক্ষে সরাসরি প্রবেশ করতে পারি না।’

কেন্দ্র সচিব ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুচ আলী হাওলাদার বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকস্মিক পরিদর্শনে এসে বই খুলে পরীক্ষা দিতে দেখে ৯ জনকে বহিষ্কার করেছেন।’ তবে কেন ইসলামের ইতিহাস পরীক্ষায় ওই বিষয়ের শিক্ষককেই পরিদর্শক করা হয়েছিল—এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ইউএনওর নির্দেশে পুলিশ হেফাজতে থাকা প্রভাষক জাকিয়া বেগমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, ‘পরীক্ষার কক্ষে গিয়ে অসদুপায় অবলম্বনের প্রমাণ পাওয়ায় ৯ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কক্ষ পরিদর্শক জাকিয়া বেগমের বিরুদ্ধে আদেশ অমান্য ও নকলে সহায়তার অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্র প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কেন্দ্র সচিবকেও পরবর্তী পরীক্ষায় পরিবর্তন করা হবে।’