Image description

রাজশাহী নগরীর কোর্টস্টেশন মোল্লা বাঁশের আড্ডা এলাকায় পুকুর ভরাট হয়ে যাওয়ার পর প্রশাসনের তৎপরতা দেখা গেছে। পুকুরটি ভরাট করার সময় রাজশাহী বোয়ালিয়া ভুমি অফিস থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া না হলেও ভরাট হয়ে যাওয়ার পর ভুমি অফিস থেকে নাটকীয় অভিযান চালানো হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বার) বেলা ১১টার দিকে পুকুরটি পুরোটাই ভরাট হওয়ার পর খোদ রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার. আ. ন. ম. বজলুর রশীদ, রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক তাছমিনা খাতুন, সহকারী পরিচালক মো. কবির হোসেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহমদ আল মঈন, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) নগর পরিকল্পক মো. রাহেনুল ইসলাম রনী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহিনুল হাসান, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ, রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) আরিফ হোসেন ও জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার এসএম রকিবুল হাসান উপস্থিত হন।

স্থানীয়রা বলছেন, বোয়ালিয়া থানা ভুমি অফিসের লোকজন সময় মত কাজ না করে এখন লোক দেখানো কাজ করতে এসেছেন। ভুমি অফিসের এমন নাটকের কারণে এখন ক্ষতির মুখে পড়ছে পুকুরের মালিক।

জানা গেছে, গত ১৫ অক্টোবরের পর থেকে নগরীর মোল্লা বাঁশের আড্ডা এলাকায় একটি পুকুর ভরাট শুরু হয়। প্রথম দিকে অনেকেই এই পুকুরটি ভরাট না করার জন্য ভুমি অফিসে অভিযোগ দেন। কিন্তু স্থানীয়দের এই অভিযোগ আমলে নেননি ভুমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভুমি)।

এসময় বিভাগী কমিশানার জানান, সিটি করপোরেশন এলাকায় পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ হলেও যারা এই কাজটি করছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অথচ এই পুকুর ভরাটের বিষয়ে অভিযোগ দেয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। যদি ব্যবস্থা নেয়া হতো তাহলে এই পুকুর ভরাট হতো না। কিন্তু পুকুরটি ভরাট হওয়ার পর তোড়জোর শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

দেখা গেছে, ভরাট হয়ে যাওয়া পুকুরে গিয়ে জেলা প্রশাসন দুটি ড্রাম ট্রাক ও একটি ভেকু মেশিন দিয়ে বালু তুলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া শুরু করেন। এতেই বিপত্তিবাধে স্থানীয়দের মধ্যে। শুরু হয় এসিল্যান্ডকে নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনা। সহকারী কমিশনারের এমন কর্মকান্ড দেখে হতভম্ব স্থানীয় মানুষ। স্থানীয়রা বলছেন, এসিল্যান্ডকে দেয়া টাকার পরিমান কম হওয়ার কারণে তিনি পুকুর ভরাট হওয়ার পর নাটক সাজাতে এসেছেন।

অনেকেই বলছেন, এসিল্যান্ডের এই লোক দেখানো অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন পুকুরের মালিক। কারণ তারা তো ভরাট করেই ফেলেছেন। এখন কি এসিল্যান্ড চাইলেই পুকুরটি পুনখনন করতে পারবেন? প্রশাসন তো যখন সময় ছিল তখন কোনো প্রতিকার করেনি। তাহলে এই লোক দেখানো অভিযানেরই বা দরকার কি। আবার অনেকেই বলছেন, যেহুত পুকুর ভরাট হয়ে গেছে, সেহুত এটি আর খনন করা সম্ভব না, তাই প্রশাসনের উচিৎ অযথা পুকুর মালিককে ক্ষতিগ্রস্ত না করা। 

জানা গেছে, পুকুরটির মালিক আরিফ, আসরাফ মতিউর রহমানসহ তাদের অংশীদারদের। তারা ঠিকাদার দিয়ে পুকুরটি ভরাট করে নিয়েছেন।

এব্যাপারে বোয়ালিয়া থানা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আরিফ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, উর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে আমরা পুকুরে অভিযান চালিয়েছি। 

পুকুর ভরাট শেষে অভিযান কেন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা চাইলেই অভিযান চালাতে পারি না। কিছু নিয়ম আছে আমাদের। অভিযানে গেলে লোকবল প্রয়োজন হয়, সব মিলে বিষয়টি দেরি হয়ে গেছে। এখন পুকুর পুন:খনন করতে যে টাকা লাগবে সেটি কে দিবে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।