Image description

গুগলকে কনটেন্ট সরানোর অনুরোধের বিষয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক সমালোচনা বা ভিন্নমত দমনে নয়, বরং মিসইনফরমেশন, প্রোপাগান্ডা, এবং চরিত্রহননমূলক অপপ্রচার রোধেই গুগলকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে সরকার দ্ব্যর্থহীনভাবে জানিয়েছে, দেশের কোনো পত্রিকার সংবাদ, সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট, ভিডিও, আর্টিকেল বা সরকারের সমালোচনামূলক কোনো কনটেন্ট সরানোর জন্য কোনো প্ল্যাটফর্মকে অনুরোধ করা হয়নি। বর্তমান সরকার সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে বিগত সরকারের মতো কোনো ‘বট বাহিনী’ পরিচালনা করে না। বিটিআরসি বা এনটিএমসির সরাসরি কনটেন্ট সরানোর ক্ষমতা নেই, তাই নিয়ম মেনেই গুগল বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মকে অনুরোধ জানাতে হয়।

গুগলের ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মোট ২৭৯টি কনটেন্ট সরানোর অনুরোধ গেছে। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের (জুন-ডিসেম্বর ২০২২) ৮৬৭টি অনুরোধের তিন ভাগের এক ভাগের চেয়েও কম। এছাড়া ২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে অনুরোধ ছিল মাত্র ১৫৩টি। অর্থাৎ বিগত সরকারের তুলনায় বর্তমান সরকারের অনুরোধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

সরকার জানায়, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উৎস থেকে তীব্র মিসইনফরমেশন বা গুজব ক্যাম্পেইনের শিকার হয়। প্রতিবেশী দেশের মিডিয়া এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের পক্ষ থেকে সাইবার স্পেসে ক্রমাগত উস্কানি ও প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং 'মব লিঞ্চিং'-এর মতো ঘটনা রোধে সরকারকে এসব কনটেন্ট সম্পর্কে রিপোর্ট করতে হয়েছে।

তবে গুগলের রিপোর্টে ‘মিসইনফরমেশন’ বা ‘চরিত্রহনন’ নামে আলাদা ক্যাটাগরি না থাকায়, এসব অনুরোধকে ‘সরকারের সমালোচনা’ ক্যাটাগরিতে দেখানো হয়েছে, যা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করেছে। এছাড়া অনলাইন জুয়া বা গ্যাম্বলিং বন্ধেও কিছু অনুরোধ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২৫’ সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৪০ থেকে বেড়ে ৪৫-এ উন্নীত হয়েছে, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ইন্টারনেট স্বাধীনতায় এই অগ্রগতি বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দ্বারা স্বীকৃত।

সরকারের ব্যাখ্যা না নিয়ে স্পর্শকাতর বিষয়ে একপাক্ষিক সংবাদ প্রকাশে হতাশা ব্যক্ত করেছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। প্রকৃত সত্য আড়াল করে খণ্ডিত সংবাদ পরিবেশন দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পরিচয় বহন করে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।