Image description

ভারতের স্বার্থ রক্ষা এবং তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার নীল নকশা হিসেবেই ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল—এমন গুরুতর অভিযোগ করেছেন বিডিআর বিদ্রোহে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, সেনাবাহিনীর ভেতর ‘ভারতবিরোধী’ মনোভাবাপন্ন কর্মকর্তাদের সতর্ক করতেই এই নৃশংসতা চালানো হয়।

সোমবার রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে ‘বিডিআর তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশে শহীদ পরিবারের মতপ্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন শহীদ পরিবারের প্রতিনিধিরা।

সংবাদ সম্মেলনে শহীদ বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘সেসময় বার্তাটি ছিল পরিষ্কার—সেনাবাহিনীতে কেউ ভারতবিরোধী হলে তার পরিণতি হবে পিলখানার মতো।’ তিনি তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসা অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

শহীদ কর্নেল কুদরুতী ইলাহীর ছেলে সাকিব রহমান এবং শহীদ কর্নেল মুজিবুল হকের ছেলে মুবিন হক অভিযোগ করেন, বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার এবং তাদের ঘনিষ্ঠ কিছু সেনা কর্মকর্তা শহীদ পরিবারগুলোকে নানাভাবে হুমকি ও হয়রানি করেছে। তারা আন্তর্জাতিক মানের বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। এছাড়া শহীদ নূরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম হান্নান এই হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন।

এদিকে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতা ও ভারতের সম্পৃক্ততা ছিল বলে উল্লেখ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। রবিবার (৩০ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।

কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান জানান, তদন্তে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হিসেবে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন—ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম ও প্রয়াত সাহারা খাতুন।

এছাড়াও সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবরের নামও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা এবং ভারতীয় স্বার্থ হাসিল করাই ছিল এই হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য।