কুয়াকাটার আবাসিক এলাকায় শুঁটকি উৎপাদন, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পর্যটক ও স্থানীয়রা
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকা নবীনপুরে যত্রতত্র শুঁটকি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের কারণে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে পরিবেশ। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের আপত্তি সত্ত্বেও কতিপয় ব্যবসায়ী সংঘবদ্ধ হয়ে আবাসিক এলাকায় এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে শুঁটকির তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বেড়াতে আসা পর্যটকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, পর্যটন শহরের নবীনপুর এলাকার বিশাল জায়গাজুড়ে মাচায় কাঁচা মাছ বিছিয়ে শুঁটকি তৈরির কাজ চলছে। অথচ এর পাশেই রয়েছে ঘনবসতিপূর্ণ ঘরবাড়ি, স্কুল ও মসজিদ। আবাসিক এলাকায় এমন কর্মকাণ্ডে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দিন-রাত একই গন্ধ, ঘরেও থাকা যায় না। আমাদের ছোট শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এত বড় আবাসিক এলাকায় কীভাবে শুঁটকি শুকানোর কাজ চলতে পারে, তা বুঝি না। আমরা এটি দ্রুত বন্ধ চাই।’
আরেক বাসিন্দা আব্দুল মন্নান বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন গর্ভবতী নারীরা। দুর্গন্ধে তাদের মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব লেগেই থাকে। অনেক সময় ঘর ছেড়ে বাইরে যাওয়াও দায় হয়ে পড়ে। আমরা বহুবার অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।’
কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটক নিলয় আবেদীন বলেন, ‘পর্যটন এলাকায় শুঁটকি মাছের গন্ধে রাস্তায় হাঁটা তো দূরের কথা, হোটেলের রুমেও থাকা যাচ্ছে না। পর্যটনের স্বার্থে শুঁটকি উৎপাদনের জন্য আলাদা জোন বা নির্ধারিত স্থান করে দেওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক মো. ইয়াসীন সাদেক বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আবাসিক এলাকায় শুঁটকি শুকানোর কোনো অনুমতি নেই। আমরা দ্রুত খোঁজ-খবর নিয়ে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। খুব শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’




Comments