Image description

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচির মধ্যেই তালা ভেঙে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা নিয়েছেন অভিভাবকরা।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সহায়তায় বিভিন্ন স্কুলের গেটের তালা ভেঙে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়। শিশুদের জিম্মি করে শিক্ষকদের এমন আন্দোলনের তীব্র সমালোচনা করেছেন অভিভাবকরা।

জানা যায়, উপজেলার ১৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তিন দফা দাবিতে গত চার দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন। এরই অংশ হিসেবে বুধবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে এসে গেট বন্ধ দেখে আটকা পড়ে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অভিভাবকরা। 

খবর পেয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটে যান কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাউছার হামিদ। পরে তার উপস্থিতিতে এবং অভিভাবকদের সহযোগিতায় তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করানো হয়। এরপর অভিভাবকরাই অনেকটা পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করে পরীক্ষা গ্রহণ করেন। এ সময় কোনো কোনো বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক উপস্থিত থাকলেও সহকারী শিক্ষকদের দেখা মেলেনি।

অভিভাবক নাসির উদ্দিন রতন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সারা বছর বাচ্চারা লেখাপড়া করেছে। আজ পরীক্ষা দিতে এসে দেখে গেটে তালা। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে শিক্ষকদের এ কেমন আন্দোলন?’

আরেক অভিভাবক সৈয়দ রাসেল বলেন, ‘শিক্ষকদের অসহযোগিতা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। মাত্র দু-একজন অসুস্থতার কারণে আসেনি। অভিভাবকদের তৎপরতায় সহকারী শিক্ষকদের এই অযৌক্তিক আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে।’

কলাপাড়া মঙ্গলসুখ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোসা. শিউলি বেগম বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে ৭০২ জন পরীক্ষার্থী। সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করায় বিদ্যালয়ের দপ্তরি ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাউছার হামিদ বলেন, ‘গতকাল রাতে খবর পাই সহকারী শিক্ষকরা বিভিন্ন স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি জেনে আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে তালা ভেঙে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করেছি। শিশুদের জিম্মি করে যারা এই কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’