Image description

দিনাজপুরের বিরল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এ কে এম ইকরামুল হকের বিরুদ্ধে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ৭ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগের অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দিনাজপুরের চেয়ারম্যান, বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকেও পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত এক বছর ধরে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন শিক্ষক ইকরামুল হক। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি পরিবারকে জানায়। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষক ইকরামুল হকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও তিনি একই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন। ওই ঘটনায় ছাত্রীর বাবা অপহরণ মামলা করলে বিরল থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে এবং স্থানীয় সালিশে ছাত্রীকে তালাক দিয়ে বিষয়টি রফা করেন তিনি। এছাড়া নারী কেলেঙ্কারিসহ একাধিকবার ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠলেও অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে তিনি পার পেয়ে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তারা তাদের মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। অনেকে মেয়েকে এই বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথাও ভাবছেন।

এ বিষয়ে বিরল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই ওই শিক্ষক এমন কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। তবে বিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে কর্তৃপক্ষ এতদিন বিষয়গুলো অভ্যন্তরীণভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছিল।’

তবে অভিযুক্ত শিক্ষক এ কে এম ইকরামুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘একটি পক্ষ ওই ছাত্রীকে ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

এ বিষয়ে বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিমরান মোহাম্মদ সায়েক বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইশতিয়াক আহমেদ জানান, ‘ইতোমধ্যে নোটিশ জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’