ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা নতুন গতি পেয়েছে। যুদ্ধ বন্ধে একটি সমঝোতা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি কাছাকাছি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপের একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা শেষে স্থানীয় সময় সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তিনি এ মন্তব্য করেন।
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, জেলেনস্কির সঙ্গে তার আলোচনা ছিল ‘খুব দীর্ঘ এবং খুব ভালো’। ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ন্যাটোর নেতাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে বলে জানান তিনি। ট্রাম্পের ভাষায়, ‘আমি মনে করি, এখন আমরা শান্তিচুক্তির সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে আছি।’
ট্রাম্প এমন সময় এই মন্তব্য করলেন, যখন জার্মানির রাজধানী বার্লিনে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন ইউরোপীয় শক্তিগুলোর নেতারা। ওই বৈঠকে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি কার্যকর ও রক্ষা করতে একটি ‘বহুজাতিক বাহিনী’ গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়। ইউরোপীয় নেতাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে শক্ত নিরাপত্তা নিশ্চয়তা থাকলে রাশিয়া ভবিষ্যতে চুক্তি ভাঙতে পারবে না।
এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তিচুক্তির পরও ইউক্রেনের সেনাবাহিনী শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে এবং শান্তিকালেও প্রায় আট লাখ সেনা বজায় রাখা হবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ ও যাচাই ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যা চুক্তি লঙ্ঘন শনাক্ত এবং ভবিষ্যৎ হামলার আগাম সতর্কতা দেবে।
জেলেনস্কি এর আগে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা সহজ ছিল না, তবে এতে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার প্রস্তাব দিচ্ছে, তা গুরুত্বপূর্ণ হলেও ভূখণ্ড প্রশ্নে এখনও দুই পক্ষের অবস্থান ভিন্ন।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল ডনবাস—ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল—নিয়ে মতভেদই এখন বড় বাধা। মার্কিন কর্মকর্তাদের একটি অংশের মতে, শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে এসব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে হতে পারে। তবে জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, এ ধরনের ছাড় তার দেশের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
অন্যদিকে ভূখণ্ডের স্বীকৃতি এবং ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ না দেয়া বিষয়ে রাশিয়াও তার দাবিতে অনড় রয়েছে। মস্কো ইউরোপীয় নেতৃত্বাধীন কোনো বাহিনী ইউক্রেনে মোতায়েনের প্রস্তাবের বিরোধিতাও করেছে তারা।




Comments