শান্তিরক্ষা মিশনে শহীদ উলিপুরের সেনা সদস্য মমিনুলকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে দক্ষিণ সুদানে দায়িত্ব পালনকালে প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় শহীদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য মমিনুল ইসলামের মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পাণ্ডুল ইউনিয়নে তাঁর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে দুপুরে একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে শহীদ মমিনুল ইসলাম ও রাজারহাটের শহীদ শান্ত মণ্ডলের মরদেহ উলিপুর হেলিপ্যাডে আনা হয়। এ সময় সেনাবাহিনী ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে শহীদ সেনাদের প্রতি সশস্ত্র সালাম ও ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করেন। পরে সেনাবাহিনীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ দুটি স্ব-স্ব পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শহীদ মমিনুল ইসলামের মরদেহ পাণ্ডুল ইউনিয়নের বাড়িতে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। স্বজনদের আহাজারি আর কান্নায় পুরো এলাকার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। তাঁকে শেষ নজর দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর ৬ মাস। তিনি স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মরদেহ গ্রহণকালে উলিপুর হেলিপ্যাডে উপস্থিত ছিলেন উলিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম মেহেদী হাসান, উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইবনে সাদিক সিদ্দিক, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা।
প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলেন, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা যে অসামান্য অবদান রাখছেন, মমিনুল ইসলামের এই আত্মত্যাগ তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। জাতি চিরকাল এই বীর সেনানিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলায় ৬ জন বাংলাদেশি সেনাসদস্য শহীদ হন। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার মমিনুল ইসলাম এবং রাজারহাট উপজেলার ঠাটমারি গ্রামের শান্ত মণ্ডল রয়েছেন। আজ রাষ্ট্রীয় সম্মান ও বিনম্র শ্রদ্ধার মধ্য দিয়ে এই দুই বীর সন্তানকে চিরবিদায় জানানো হলো।




Comments