Image description

চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার এক তরুণের মরদেহ বাড়িতে নিতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছে পরিবার ও স্বজনরা। বাড়ির প্রবেশের উপযুক্ত রাস্তা না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামানোর পর প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা প্রধান সড়কেই পড়ে ছিল মো. আবুল বশরের (১৮) মরদেহ। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ভোরে বাঘাইছড়ি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাক মেম্বার পাড়ায় এই অমানবিক ঘটনা ঘটে।

নিহত আবুল বশর ওই এলাকার মো. রমজান আলীর ছেলে। গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের ‘রাস্তার মাথা’ নামক এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণ হারান।

স্বজনরা জানান, সোমবার শেষ রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে বশরের মরদেহ এলাকায় পৌঁছায়। কিন্তু আব্দুর রাজ্জাক মেম্বার পাড়ার ভেতর পর্যন্ত যাওয়ার মতো কোনো রাস্তা না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি মূল সড়কেই থেমে যেতে বাধ্য হয়। কোনো বিকল্প না পেয়ে গভীর রাত থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মরদেহটি সড়কেই পড়ে থাকে। পরে সকালে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অন্যের জমির ওপর দিয়ে কাঁদামাটির সরু পথ ব্যবহার করে অতি কষ্টে মরদেহটি বাড়িতে নেওয়া হয়।

এই ঘটনায় নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় অন্তত কয়েকশ পরিবারের বসবাস থাকলেও দীর্ঘ দিনেও একটি যাতায়াতযোগ্য রাস্তা নির্মিত হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলে এলাকাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এমনকি মৃত্যুর পর শেষ বিদায়েও এমন ভোগান্তি মেনে নেওয়া যায় না।

এলাকাবাসী আরও জানান, রাস্তা নির্মাণের দাবি নিয়ে তারা বারবার স্থানীয় কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। প্রতিবারই শুধু আশ্বাস মিলেছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আজ বশরের লাশের সাথে হওয়া এই অবমাননা সেই দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক অবহেলারই বহিঃপ্রকাশ বলে তারা মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে বাঘাইছড়ি পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন গ্রামবাসী। ভবিষ্যতে আর কোনো পরিবারকে যেন এমন মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে না হয়, সেজন্য অবিলম্বে রাস্তাটি নির্মাণের জোর দাবি জানানো হয়েছে।