Image description

বছরের শেষ দিনে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে গোপালগঞ্জ। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে জেলায় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। হাড়কাঁপানো শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে জেলাজুড়ে জনজীবনে চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে।

গোপালগঞ্জ আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আবু সুফিয়ান জানান, আজ সকাল ৬টায় জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৭ শতাংশ। জেলায় গত পাঁচ দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না, ফলে শীতের তীব্রতা বহুগুণ বেড়েছে।

সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের ও শ্রমজীবী মানুষ। বিশেষ করে কোটালীপাড়া উপজেলার নিম্ন জলাভূমি এলাকার দিনমজুর ও কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে বোরো ধান চাষের প্রস্তুতি ব্যাহত হচ্ছে। জীবিকার তাগিদে কুয়াশাভেজা সকালে রাস্তায় বের হওয়া ভ্যানচালক শুকুর আলী জানান, শীতের কারণে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না, ফলে দিনভর বসে থাকলেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। সড়কের পাশে খড়কুটো জ্বালিয়ে অনেককে শরীর গরম করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

শীতের এই তীব্রতায় দেখা দিয়েছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কুমার মৃদুল দাস জানান, শৈত্যপ্রবাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি ও শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি। রোগীর বাড়তি চাপে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো।

তীব্র ঠান্ডায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন গৃহহীন ও দুস্থ মানুষ। কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাগুফতা হক জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ শুরু হয়েছে। সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

মানবকন্ঠ/আরআই