কারখানা সচল থাকায় খালেদা জিয়ার জানাজায় যেতে না পেরে কাঁদলেন শ্রমিকরা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি ও রাষ্ট্রীয় শোক উপেক্ষা করে সাভারের চামড়া শিল্পনগরীর (বিসিক) কিছু কারখানা খোলা রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শ্রমিকরা। প্রিয় নেত্রীর শেষ বিদায়ে শরিক হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও কারখানায় আটকে থাকায় জানাজায় অংশ নিতে পারেননি কয়েক শ শ্রমিক।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সাভারের বিসিক চামড়া শিল্পনগরী ঘুরে দেখা যায়, সরকারি নির্দেশনা মেনে অধিকাংশ ট্যানারি বন্ধ থাকলেও ‘আরকে ট্যানারি’ ও ‘মেসার্স মুন ট্যানারি’র মতো কিছু কারখানায় পুরোদমে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রয়েছে।
আরকে ট্যানারির শ্রমিক জীবন চোখে জল আর শোকার্ত কণ্ঠে বলেন, "অনেক ইচ্ছে ছিল খালেদা জিয়ার জানাজায় যাব। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সব ট্যানারি ছুটি দিলেও আমাদের ট্যানারি ছুটি দেয়নি। ছোটবেলা থেকে উনাকে ভালোবাসি। উনার শেষ বিদায়ে শরিক হতে পারলাম না, এই ভাগ্যটুকুও আমার হলো না।"
একই কারখানার শ্রমিক মাহফুজ আক্ষেপ করে জানান, সকালে তাদের জানাজায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ পর্যন্ত কারখানার ভেতরেই আটকে রেখে কাজ করানো হয়েছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, এই কারখানাগুলো বিজয় দিবসের মতো জাতীয় ছুটির দিনেও কাজ করায়। আগে রাজনৈতিক প্রভাবে শ্রমিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হলেও এখন পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন ঘটেনি।
জানাজায় না যেতে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আরকে ট্যানারির ম্যানেজার ইসমাইল দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে সাংবাদিকদের বলেন, "কিছু জরুরি কাজ থাকায় সকালে কারখানা খুলেছি। আমরা সবাই যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করছি।" তবে ততক্ষণে ঢাকার জানাজার সময় ঘনিয়ে আসায় তাদের আর যেতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে চামড়া শিল্পনগরীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহরাজুল মায়ান বলেন, "সাধারণত প্রজ্ঞাপনে উৎপাদনমুখী কারখানা চালুর বিষয়ে নিজস্ব কিছু ব্যাখ্যা থাকে। তবে কেউ যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছাড়া শ্রমিকদের আবেগ ও ভাবাবেগকে গুরুত্ব না দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়, তবে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।"
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও বুধবার সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিলেন। সরকারি এই আদেশের তোয়াক্কা না করে কারখানা চালু রাখায় সাভারের শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও হতাশা বিরাজ করছে।
মানবকন্ঠ/আরআই




Comments