Image description

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম আজ ঘোষণা করেছেন যে, সরকার সংবাদপত্র ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জন্য সরকারি সুবিধা আরও বাড়াবে। তবে, এর বিনিময়ে মিডিয়া মালিকদের সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন।

মাহফুজ আলম সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, যেসব মিডিয়া এই ন্যূনতম বেতন দেবে না, তারা কোনো সরকারি সুবিধা পাবে না। সরকারের লক্ষ্য হলো সাংবাদিকদের প্রবেশ পদে একটি নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো তৈরি করা।

উপদেষ্টা জানান, সরকার বেসরকারি টেলিভিশন সম্প্রচার ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজ করবে। এই পদক্ষেপের ফলে প্রতিটি টিভি চ্যানেলের দর্শক সংখ্যা জানা যাবে, যা তাদের বিজ্ঞাপন আয়ে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। ভালো পারফরম্যান্স দেখানো চ্যানেলগুলো বেশি বিজ্ঞাপন পাবে এবং তাদের আয় বাড়বে।

নতুন টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার বিদ্যমান নীতিমালা মেনেই নতুন চ্যানেলের অনুমোদন দিচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হলো মিডিয়া খাতে একটি সুস্থ ও ইতিবাচক প্রতিযোগিতা তৈরি করা।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, কমিশন-প্রস্তাবিত ২৩টি সুপারিশের মধ্যে ১৩টি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ এবং গণমাধ্যম কর্মী আইন প্রণয়নের বিষয়টি পর্যালোচনাধীন রয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য নীতিমালা তৈরির বিষয়ও সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় আছে।

অনলাইন মিডিয়া ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগ কাজ করছে। যেসকল অনলাইন মিডিয়া কনটেন্ট প্রচার করে অর্থ উপার্জন করে, তাদের রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

পত্রিকার প্রচার সংখ্যায় অসংগতি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি) গত তিন মাসে দেশের অধিকাংশ পত্রিকার প্রচার সংখ্যা মনিটরিং করেছে। অনেক পত্রিকা ৫০০ বা ১০০০ কপি ছাপায়। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে পত্রিকার প্রচার সংখ্যা কমানো হবে এবং বিজ্ঞাপনের হার দ্বিগুণ করা হবে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গুজব প্রতিরোধে প্রতিটি মিডিয়ার নিজস্ব ফ্যাক্ট চেকিং টিম থাকা উচিত বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।

স্থায়ী গণমাধ্যম কমিশন গঠনের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, এটি স্বল্প সময়ে সম্ভব নয়, কারণ এর জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মপরিধি নতুন করে নির্ধারণ করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, সরকার সাংবাদিকতায় নৈতিকতা দেখতে চায় এবং এর জন্য সাংবাদিকদের বেতন বৃদ্ধি অত্যাবশ্যক। তিনি কপিরাইট লঙ্ঘনের মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের সমালোচনা করে কপিরাইট মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।