Image description

২০১১ সালে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই মো. আরফান হোসেন (২১) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-তে সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি এই সাফল্য অর্জন করেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম আরফান হোসেনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফানের বাবা মো. নুরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, “বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই আরফান বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।”

তিনি আরও বলেন, “সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।”

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তার মরদেহ কাঁটাতারে ঝুলে থাকার দৃশ্য দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এই ঘটনার পর ফেলানীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফেলানীর মৃত্যু সীমান্ত হত্যার একটি মর্মস্পর্শী ঘটনা। আরফান হোসেনের এই নিয়োগ তাঁর পরিবারের দীর্ঘদিনের চাপা বেদনার মাঝে আশার আলো জ্বালিয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়দের বিশ্বাস, ফেলানীর অসমাপ্ত স্বপ্ন একদিন আরফান পূর্ণ করবেন।

এইচএসসি পাস আরফান হোসেনের নিয়োগপত্র প্রাপ্তিতে তাঁর বাবা নুরুল ইসলাম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “ছেলের এই চাকরি তার যোগ্যতায় হয়েছে। সবার দোয়াও ছিল। আমি আশা করি, সে চাকরিজীবনে সততা ও দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবে। তাহলে আমার মেয়ে ফেলানীর আত্মা শান্তি পাবে।”

আরফান হোসেনের এই নিয়োগ ফেলানীর পরিবারের জন্য একটি নতুন শুরুর প্রতীক। স্থানীয়রা মনে করছেন, আরফানের মাধ্যমে ফেলানীর স্মৃতি ও তার পরিবারের সংগ্রাম দেশসেবার মাধ্যমে অমর হয়ে থাকবে। বিজিবির এই উদ্যোগ ফেলানীর পরিবারের প্রতি তাদের সমর্থন ও দায়বদ্ধতার প্রতিফলন।