Image description

রাজশাহীতে শুরু হতে যাচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত বিভাগীয় বইমেলা। আগামীকাল শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) থেকে নগরীর কালেক্টরেট মাঠে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। এবারের মেলায় পুরাতন বই জমা দিয়ে নতুন বই পাওয়ার এক দারুণ সুযোগ থাকছে। এছাড়াও নতুন বই কিনলে প্রতিটি ক্রেতার নাম লটারিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং বিজয়ীদের জন্য থাকবে আকর্ষণীয় পুরস্কার। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মেলার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের বাস্তবায়নে ৩১ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ৯ দিন এই বিভাগীয় বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র এই মেলার আয়োজক।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় মেলার শুভ উদ্বোধন হবে এবং ৮ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মেলার পর্দা নামবে। কর্মদিবসে প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং ছুটির দিনগুলোতে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে।

হাবিবুর রহমান আরও বলেন, এবারের মেলায় বাংলা একাডেমিসহ মোট ১১টি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ৭০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। মোট ৮১টি স্টল থাকবে, যার অধিকাংশই সরাসরি প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। ঢাকা থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে এই প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় অংশ নিচ্ছে।

প্রতিদিন বাদ মাগরিব থেকে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে ৭ দিনের জন্য ৭টি ভিন্ন বিষয়বস্তু থাকবে। প্রতিটি আলোচনায় একজন প্রধান আলোচক এবং দুজন আলোচক থাকবেন। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক এবং বোদ্ধাগণ এতে অংশ নেবেন। এছাড়াও প্রতিদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। হাবিবুর রহমান আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এবারের বইমেলা অত্যন্ত বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ হবে। লেখক আড্ডার ব্যবস্থাও থাকবে, যা পাঠকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করবে।

তিনি জানান, ৮১টি স্টলের মধ্যে ৯টি শিশু কর্নার থাকবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মেলা সফলভাবে সম্পন্ন হবে। নগরীর ৯০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার বই কেনার জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠিপত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করছেন, সকল স্তরের মানুষের পদচারণায় মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠবে।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, মেলায় একটি টাস্ক টিম থাকবে। কোনো বইয়ের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট স্টল বন্ধ করে দেওয়া হবে। সাধারণত বইমেলায় বই ক্রয়ে ডিসকাউন্ট থাকে, এখানেও তার ব্যতিক্রম হবে না। প্রতিটি বইয়ে ক্রেতাদের ২০-২৫% ডিসকাউন্ট দেওয়ার জন্য সকল প্রকাশনীকে অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, মেলায় কে কত টাকার বই কিনলেন, তার রেকর্ড রাখা হবে। এরপর প্রতিদিন বই ক্রেতাদের নাম লটারি করে বিজয়ীদের আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়া মেলার শেষ দিন সকল ক্রেতাকে নিয়ে একটি মেগা লটারি অনুষ্ঠিত হবে এবং বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হবে। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র থেকেও কিছু বই আনা হয়েছে।

এনামুল হক এবারের মেলার একটি বিশেষ আকর্ষণ উল্লেখ করে বলেন, এবার মেলায় বই এক্সচেঞ্জ করার সুযোগ থাকবে। পাঠক ও ক্রেতারা তাদের বাসা থেকে পুরাতন বই এনে জমা দিয়ে নতুন বই নিতে পারবেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এবারের বইমেলা পাঠক ও জনমুখর হবে।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।