ঈশ্বরদীতে আটটি সদ্যোজাত ছানা হারিয়ে পাগলপারা মা কুকুরটি অবশেষে পেল নতুন দুই সন্তানের দেখা। ছানা হারানোর দুদিন পর একজন পশুপ্রেমীর দেওয়া দুটি দত্তক ছানাকে আপন করে নিয়েছে সে। বর্তমানে মা কুকুর ও ছানা দুটি ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ চত্বরে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলার ব্যবসায়ী ও পশুপ্রেমী শাহরিয়ার অমি মা কুকুরটিকে এই ছানা দুটি উপহার দিয়েছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন ছানা পেয়ে মা কুকুরটি এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, 'একটি মা কুকুরের শাবকদের জন্য যথেষ্ট দুধ থাকে। আটটি নবজাতক হারানোর পর গত কয়েক দিন ধরে দুধ নিঃসরণ না হওয়ায় মা কুকুরটি প্রচণ্ড কষ্টে ভুগছিল। বিশাল মানসিক আঘাতের পাশাপাশি দুধের কারণে সে উদ্বেগ নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল।'
'নতুন ছানা দুটি মা কুকুরের দুধ পান করা শুরু করায় সে শারীরিক স্বস্তি ও শান্তি পাচ্ছে। এতে সে মানসিকভাবেও শক্ত হচ্ছে,' বলেন তিনি।
ঈশ্বরদী শহরের ব্যবসায়ী শাহরিয়ার অমি মিডিয়াকে জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে পোষা কুকুর রাখতে অভ্যস্ত। সম্প্রতি তার নিজের কুকুর সাতটি ছানার জন্ম দিয়েছে। যখন আটটি ছানা হারিয়ে মা কুকুরের কান্নার খবর গণমাধ্যমে আসে, তখন তা দেশের মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কুকুরটিকে দুটি ছানা দান করার সিদ্ধান্ত নেন।
তার ভাষ্য, 'অন্যের সন্তানকে গ্রহণ করা কোনো পশুর জন্য সহজ ছিল না। তাই আমি প্রথমে মা কুকুরটির দুধ সংগ্রহ করি এবং সেই দুধ নতুন ছানার গায়ে মাখিয়ে দেই। এরপর বুধবার বিকেলে শাবক দুটিকে মা কুকুরের কাছে দেই।নিজের দুধের গন্ধ পেয়ে মা কুকুরটি অবশেষে নতুন ছানা দুটিকে আপন করে নেয়।'
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, যদিও নতুন ছানা দুটির বয়স প্রায় ২৫ দিন, তবুও তারা আরও এক মাস বা তার বেশি সময় ধরে মা কুকুরের দুধ পান করবে। এতে মা কুকুর শারীরিক ও মানসিক শান্তিতে থাকবে।




Comments