Image description

চট্টগ্রামের আনোয়ারা-কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম-১৩) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজামের মতবিনিময় সভায় পুলিশের দায়েরকৃত মামলার আসামিসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেত্রীর উপস্থিতি ও বক্তব্য দেওয়া নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলের ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।

জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের তৈলারদ্বীপ এলাকায় নিজ বাসভবনে মহিলা সমাবেশের আয়োজন করেন বিএনপি প্রার্থী সরওয়ার জামাল নিজাম। সেখানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নারী জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত একাধিক নেত্রী উপস্থিত ছিলেন।

সবচেয়ে বেশি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে সমাবেশে উপস্থিত আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সাজিয়া সুলতানার উপস্থিতি। তিনি গত ১৭ অক্টোবর জুঁইদন্ডী চৌমুহনী এলাকায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অরাজকতা সৃষ্টির অভিযোগে দায়েরকৃত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলার ৫৭ নম্বর আসামি। এছাড়াও বারশত ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী বিলকিস আক্তারের দেওয়া বক্তব্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আওয়ামী লীগ নেত্রী বিলকিস আক্তারকে বলতে শোনা যায়, ‘ধানের শীষ ১৭ বছর ছিল না, তাই উন্নয়ন হয়নি। আল্লাহ চেয়েছেন বলেই আমাদের এমপি সাহেবকে (সরওয়ার জামাল নিজাম) দল আবারও নমিনেশন দিয়েছে। আমরা দলবল নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষকে নির্বাচিত করব।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই নেত্রীরা দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খানসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতার ছবিও রয়েছে।

হঠাৎ বিএনপি প্রার্থীর মঞ্চে তাদের এমন সরব উপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীরা। মো. হাবিবুর রহমান নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রাজনৈতিকভাবে কতটুকু দেউলিয়া হলে আওয়ামী মহিলা লীগ দিয়ে প্রোগ্রাম করতে হয়।’ এমডি সালাউদ্দিন জাহেদ লিখেছেন, ‘খুব সুন্দর! আওয়ামী মহিলা লীগের নেত্রীদের দিয়ে মহিলা সমাবেশ, চমৎকার।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার আসামি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা সাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘বিএনপি প্রার্থীর এপিএস আমাদেরকে মহিলা ইউপি সদস্যের প্রতিনিধি হিসেবে দাওয়াত দিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে দেখি এটি মতবিনিময় সভা। উপজেলার বেশিরভাগ নারী সদস্যই সেখানে গিয়েছিলেন।’

এ বিষয়ে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েদ চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’