Image description

নিজের নয়, অকালপ্রয়াত বাবার দেখা একটি স্বপ্ন পূরণ করতেই নিরলস লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সাদিক হাসান সঞ্চয়। ছোটবেলা থেকেই বাবার মুখে শুনেছেন, বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে হবে। সেই স্বপ্নই এখন সঞ্চয়ের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু অভাবের সংসারে সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়া নিয়ে এখন দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার পূর্ব ফুলমতি গ্রামের প্রয়াত এনজিও কর্মী আক্কাছ আলীর ছেলে সাদিক হাসান সঞ্চয়। তিন বছর আগে আকস্মিকভাবে তার বাবার মৃত্যু হলে পুরো পরিবার আর্থিক সংকটে পড়ে। বাবার আয়ে চলা সংসারে নেমে আসে অন্ধকার। তবে সঞ্চয় দমে যাননি। অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিউশনি করিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন তিনি। পড়াশোনায় অদম্য এই তরুণ এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় পেয়েছেন ‘গোল্ডেন জিপিএ-৫’। পরিশ্রমের ফল হিসেবে সম্প্রতি তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন।

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেও আনন্দ নেই সঞ্চয়ের পরিবারে। মেডিকেলে ভর্তি ও পরবর্তী পড়াশোনার বিপুল ব্যয় বহন করা তার পরিবারের পক্ষে এখন প্রায় অসম্ভব। সঞ্চয়ের মা ছকিনা বেগম ও বড় বোন আসমাউল হুসনা আর্নিকা জানান, সঞ্চয় ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। বাবার স্বপ্ন পূরণে সে দিনরাত পরিশ্রম করছে। কিন্তু সংসারে অভাবের কারণে তাকে মেডিকেলে পড়ানো তাদের জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। সঞ্চয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে তারা সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতার আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

এলাকাবাসীরা জানান, সঞ্চয় অত্যন্ত বিনয়ী ও পরিশ্রমী ছেলে। টিউশনি করিয়ে সে এতদূর এসেছে। এখন তার ডাক্তার হওয়ার পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র্য। যদি সরকার বা কোনো সহৃদয় ব্যক্তি এগিয়ে আসেন, তবে সে একজন ভালো ডাক্তার হয়ে দেশের সেবা করতে পারবে।

এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ওয়ালীউল্লাহ মন্ডল বলেন, “সাদিক হাসান সঞ্চয়ের কৃতিত্বের বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। সে যদি আমাদের দপ্তর বরাবর আর্থিক সহযোগিতার জন্য আবেদন করে, তবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।”

বাবার স্বপ্ন পূরণ আর আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে এখন সমাজের বিত্তবান ও সরকারের সহযোগিতার অপেক্ষায় রয়েছেন অদম্য মেধাবী এই তরুণ।