Image description

সদর উপজেলার বটতলা উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শহিদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানিয়ে শনিবার বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই মঞ্চে জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেনসহ অন্য অতিথি-শিক্ষক সবাই জুতা পায়েও ওঠেন। ভাষার মাসে এমন ঘটনায় অনেকে ক্ষুব্ধ হন। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে শহিদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানানো হয়েছে। সেখানে মূল শহিদ মিনারটি কাপড় দিয়ে পেছনে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আর বেদিতে মঞ্চ করা হয়েছে। অতিথিদের সামনে বিশাল টেবিল এবং চেয়ার দেওয়া হয়েছে। পাশেই বক্তব্য দেওয়ার জন্য মাইকের স্ট্যান্ড দেওয়া হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেনসহ সব অতিথি একে একে সবাই জুতা পায়ে মঞ্চে উঠে চেয়ারে বসেন। বেদিতে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যদেরও জুতা পায়ে দেখা যায়। অনুষ্ঠানটি বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শেষ হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম।


সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আবদুল জলিল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক একে আজাদ বাদল ও সদস্য মো. আবুল কায়ের খোকা মাস্টার, বাঁশচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল আলীম, সহ-সভাপতি মো. মাহামুদুল হাসান বাচ্চু, সহ-সভাপতি মো. শাহজাহান আলী, সহ-সভাপতি মো. সরোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুুল লতিফ। 

জামালপুরের ভাষা ও মুক্তিসংগ্রাম গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারিতে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়া অন্য কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। জুতা নিয়ে শহিদ মিনারে পদচারণা করা ভাষা শহিদদের প্রতি অবমাননা এবং আইন অমান্য করা। যারা এ ধরনের আচরণ করবে, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া উচিত।

জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম বলেন, অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আর সবাই তো সেখানে জুতা পায়ে দিয়ে উঠেছে, তাই আমিও উঠেছি। 


বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা বলেন, প্রত্যেক বছরই সেখানে অনুষ্ঠান করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় সেখানে করা হয়েছে। প্রধান অতিথিরাই যদি উঠে, তাহলে আর কী! 

জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘সেটা যে শহিদ মিনার, আমি বুঝতেই পারিনি। আমি ভেবেছি, সেটা একটি ভাঙা মঞ্চ। কেউ যদি আমাকে বলত, সেটা শহিদ মিনার, তাহলে আমি জুতা নিয়ে উঠতাম না। প্রয়োজনে আমি সেখান থেকে নেমে যেতাম।’