Image description

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন। আগামীকাল (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবনে। মোট ১৭টি হলের শিক্ষার্থীরা এতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

এই নির্বাচনকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ, শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা ও উচ্ছ্বাস। প্রার্থীরা শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। হলে হলে, বিভাগের সামনে, ক্যাফেটেরিয়া থেকে শুরু করে প্রতিটি আড্ডার জায়গায় এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু রাকসু নির্বাচন। শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছেন।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, "আগামীকাল রাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে আমি জীবনের প্রথম ভোট দিতে যাচ্ছি। রাকসু নির্বাচন ছিল শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি—তাই এই নির্বাচন নিয়ে আমাদের মনে প্রবল আনন্দ কাজ করছে। যদিও আজ ক্লাস বন্ধ, তবুও পুরো ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। বিভিন্ন প্রার্থীর প্রচারণা ছিল বেশ চমকপ্রদ। জীবনের প্রথম ভোট দেওয়ার উত্তেজনায় আমরা সবাই ভীষণ রোমাঞ্চিত।"

এদিকে হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান বলেন, "রাকসু নির্বাচন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চর্চাকে পুনরুজ্জীবিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। দীর্ঘ বিরতির পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন আশা ও উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। আমরা চাই নির্বাচনের মাধ্যমে সত্যিকারের যোগ্য প্রতিনিধিরা উঠে আসুক।"

রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ. নজরুল ইসলাম জানান, নির্বাচনের প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। একজন ভোটার ৪৩টি ভোট দেবেন, সময় লাগবে ১০ মিনিট। এছাড়া নিরাপত্তা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রক্টরিয়াল বডির পাশাপাশি ১২টি বিজিবি টিম, ২৪টি র‍্যাব টিম এবং প্রায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে ১০০টি সিসি ক্যামেরা। সব মিলিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ও গোছানো নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।

দীর্ঘ বিরতির পর পুনরুজ্জীবিত রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এখন এক অনন্য ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে চলেছে। শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, রাকসু নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে এবং নির্বাচিত প্রতিনিধি সত্যিকারের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবেন।