Image description

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যদের বাড়ি ভাড়া না দেওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মইজ্জারটেক এলাকায় কর্ণফুলী থানার পক্ষ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এই মাইকিংয়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে অনেকে মন্তব্য করেছেন যে, পুলিশের এই ঘোষণা মূলত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের বাড়ি ভাড়া না দেওয়ার জন্য।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শরীফ জানিয়েছেন, এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এই ব্যবস্থা সব নিষিদ্ধ সংগঠনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এক মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বসে লিখিত ঘোষণা পড়ছেন।

মাইকিংয়ে বলা হয়, “আসসালামু আলাইকুম, কর্ণফুলী থানা এলাকায় সকল বাড়িওয়ালাদের অবহিত করা যাচ্ছে যে, কোনো নতুন ভাড়াটিয়া বাসা ভাড়া নিতে আসলে তার ভোটার আইডি কার্ডসহ অন্যান্য কাগজপত্র থানায় জমা দিতে হবে। কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যকে বাসা ভাড়া দেওয়া যাবে না। যদি কোনো ভাড়াটিয়া নিষিদ্ধ সংগঠনের হয়ে অপরাধমূলক বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়, তাহলে বাড়িওয়ালাকেও ওই কর্মকাণ্ডের সহযোগী হিসেবে আটক করা হবে।”

ঘোষণায় আরও বলা হয়, বিশেষ করে ব্যাচেলর যুবকদের বাসা ভাড়া দেওয়ার আগে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ (এনআইডি) প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থানায় জমা দিতে হবে। এনআইডি জমা ছাড়া বাসা ভাড়া দেওয়া হলে পরবর্তী যেকোনো অপরাধে বাড়ির মালিককেও দায় নিতে হবে। এই নির্দেশনা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্ণফুলী থানার আদেশক্রমে দেওয়া হয়েছে।

ওসি মোহাম্মদ শরীফ ব্যাখ্যা করে বলেন, ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি নতুন নয়, এটি আগে থেকেই চলমান। তবে কর্ণফুলীবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে এটি আরও জোরদার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “বাড়ির মালিকরা অনেক সময় অজান্তেই সন্ত্রাসী বা জঙ্গি সদস্যদের বাসা ভাড়া দেন। পরে তারা অপরাধ করে পালিয়ে যান।” তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি ডায়মন্ড সিমেন্ট এলাকায় একটি স্ত্রী হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীর পরিচয় বের করতে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল।

ওসি আরও বলেন, “মালিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ভাড়াটিয়াদের বিস্তারিত তথ্য রাখা জরুরি। সেজন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি রাখার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হচ্ছে। মাইকিংয়ের নির্দেশনাটি ভুলভাবে প্রচার করা হয়েছে।”

এই মাইকিংয়ের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে এই পদক্ষেপকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করলেও, কেউ কেউ এটিকে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি লক্ষ্য করে দেওয়া ঘোষণা হিসেবে দেখছেন।