
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে ইন্টার্নি চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বজনরা অভিযুক্ত ইন্টার্নি চিকিৎসককে মারধর করেছেন। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে বুকে ব্যথার সমস্যা নিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় মো. মিল্লাত মিয়া (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে তার স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ লক্ষারচর উত্তর পাড়ার বাসিন্দা এবং ইট ও বালু ব্যবসায়ী ছিলেন।
কিন্তু জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত এমবিবিএস চিকিৎসকের পরিবর্তে ইন্টার্নি চিকিৎসক নূরনবী রোগীকে চিকিৎসা দেন। অভিযোগ রয়েছে, নূরনবী এমবিবিএস ডিগ্রিধারী নন। তিনি রোগীর ইসিজি পরীক্ষা করেন এবং ব্যথানাশক ও গ্যাস্ট্রিকের দুটি ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। অথচ রোগীর প্রকৃত সমস্যা ছিল হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকজনিত। বেলা ১টার দিকে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে নূরনবী তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। স্বজনরা রোগীকে চাষাড়ার ইসলাম হার্ট সেন্টারে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, রোগীর মৃত্যু অনেক আগেই ঘটেছে।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, “ভুল চিকিৎসার কারণে আমাদের রোগীকে হত্যা করা হয়েছে। জরুরি বিভাগে এমবিবিএস চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও কেন একজন ইন্টার্নি চিকিৎসা দিলেন? এমন ঘটনা যেন আর কারও সঙ্গে না ঘটে, সে জন্য আমরা বিচার চাই।”
অভিযুক্ত ইন্টার্নি চিকিৎসক নূরনবী বলেন, “আমি রোগীকে কোমরের ব্যথা ও গ্যাস্ট্রিকের জন্য ইনজেকশন দিয়েছিলাম। ইসিজি পরীক্ষার পর তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় রেফার করি। পথে তিনি মারা যান। এরপর স্বজনরা আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছেন।”
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “ঘটনার সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না। তখন ডাক্তার মো. নাজমুল হোসেন বিপুল দায়িত্বে ছিলেন, আর নূরনবী তার সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। ইন্টার্নি চিকিৎসকের দ্বারা রোগী দেখা উচিত হয়নি, এটা ভুল হয়েছে। তিনি রোগীর যথাযথ চিকিৎসা দিতে পারেননি।”
এ ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। সচেতন নাগরিকরা এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Comments