নড়াইল সদর উপজেলায় অটোভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ১৫ বছর বয়সী কিশোর আমিনুল বিশ্বাস ওরফে আলিফকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তারই পরিচিত দুই যুবক। হত্যার পর অনুশোচনায় মসজিদে নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ দুই যুবক মিনারুল বিশ্বাস (২২) ও হৃদয় মোল্যা (২০)-কে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে অভিযুক্ত মিনারুল ও হৃদয় কৌশলে আলিফকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তারা আলিফকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে। এরপর গভীর রাতে নড়াইল সদরের দেবভোগ এলাকার নুড়িতলা বিলের পাশে নিয়ে গিয়ে হৃদয় তার পা চেপে ধরে এবং মিনারুল গলা টিপে শ্বাসরোধ করে আলিফকে হত্যা করে।
হত্যার পর তারা আলিফের মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা নিয়ে মরদেহ পাশের পুকুরে কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখে। এরপর হৃদয় তার মামার বাড়িতে গিয়ে ঘুমায় এবং ফজরের নামাজের সময় মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে।
ঘটনার দুদিন পর আলিফের পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে মিনারুলকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার দায় স্বীকার করে এবং মরদেহের অবস্থান জানায়। পুলিশ তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কচুরিপানার নিচ থেকে আলিফের মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে মিনারুল ও হৃদয় জানায়, অটোভ্যান ও সামান্য কিছু টাকা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই তারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। হত্যার পর অনুশোচনায় তারা মসজিদে নামাজ পড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, "অপরাধ কখনো নিখুঁত হয় না। আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেউ রেহাই পায় না। আমরা সবাইকে আইন মেনে চলার এবং অপরাধ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।"




Comments