Image description

প্রতিবছর ইলিশ প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের জন্য বঙ্গোপসাগর ও নদ-নদী মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। মৎস্য অধিদপ্তরের ঘোষণা অনুযায়ী, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে এ নিষেধাজ্ঞা।

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের এই উদ্যোগের ফলে সমুদ্রগামী জেলেরা বর্তমানে মাছ শিকার থেকে বিরত রয়েছেন। এই সময়ে বসে নেই উপকূলীয় এলাকার মৎস্যজীবীরা। তাঁরা এই সময় কাজে লাগিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন নিজেদের ট্রলার ও জাল মেরামতের কাজে। অনেকে আবার ট্রলারে রং করানো, জাল মেরামত, ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ ঠিক করার মতো কাজেও মন দিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মৎস্য বন্দর মহিপুর, আলীপুর ও কুয়াকাটা এলাকার বিভিন্ন জেলে পল্লি এবং ডকইয়ার্ডগুলো ঘুরে দেখা যায়, দিনরাত মাছধরা ট্রলার, নৌকা ও জাল মেরামত কাজে ব্যস্ত রয়েছে জেলেরা।

স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াস বলেন, "এই ২২ দিনের অবসর সময় আমাদের জন্য সবকিছু মেরামত করার সুযোগ। ট্রলার মেরামত, জাল ঠিক করা, ইঞ্জিন সার্ভিসিং, সবকিছু ঠিক করছে জেলেরা, যেন নিষেধাজ্ঞা শেষে পূর্ণ উদ্যমে মাছ ধরতে যেতে পারে।"

জেলে আলী মাঝি বলেন, "মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার এই সময় ট্রলার মেরামত ও পুরোনো জালগুলো ঠিক করে নিচ্ছি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেই আবার সাগরে নামতে হবে, তাই সব ধরনের কাজ গুছিয়ে নিচ্ছি।"

জেলে নেতা মো. মোস্তফা মাঝি বলেন, "এ সময় অনেক জেলে কর্মহীন হয়ে পড়ে। সরকারি সহায়তা হিসেবে চাল সরবরাহ করা হলেও তা অনেক সময় পর্যাপ্ত হচ্ছে না। আবার অনেক জেলের জেলে কার্ড না থাকায় সরকারি সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে তারা। আমরা চাই যারা সত্যিকারের জেলে তারা যেন সবাই জেলে কার্ডের মাধ্যমে সরকারি সহায়তা পায়।"

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, "ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এই পদক্ষেপের ফলে ইলিশের প্রজনন নিরাপদ হয় এবং পরবর্তীতে বাজারে ইলিশের সরবরাহ ও দামে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।" কলাপাড়া উপজেলায় শতভাগ নিষেধাজ্ঞা পালনের কথাও বলেন তিনি।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাউছার হামিদ বলেন, "এ সময় কেউ সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের টহল জোরদার করা হয়েছে। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করায় জেলেদের সাময়িক কষ্ট হলেও দীর্ঘমেয়াদে মাছের উৎপাদন বাড়বে।"