সীমান্তবাসীর অর্থনৈতিক সংকট দূর করবে পাঁচবিবির এই সেতু

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড়মানিক ছোট যমুনা নদীর ওপর নির্মিত একটি নতুন সেতু সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে। এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সীমান্তবাসীর আর্থ-সামাজিক ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থারও ব্যাপক উন্নতি হবে। সীমান্ত অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি ও অন্যান্য পেশার সঙ্গে জড়িত। সেতুটি চালু হলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে, যা সরাসরি সীমান্ত এলাকার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে সহায়ক হবে।
জানা গেছে, উপজেলা শহর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার পশ্চিমে বড়মানিক ছোট যমুনা নদীর ওপর প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে এই সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতুর ওপারে ধরঞ্জী ও আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের অসংখ্য গ্রাম ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা। সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত এবং তারা ধান, আলু, আখ ও পাটসহ সব ধরনের ফসল চাষাবাদ করেন।
সীমান্ত এলাকার কৃষকরা জানান, এতদিন সেতু না থাকায় তাদের উৎপাদিত ফসল ফরিয়াদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হতো। কিন্তু ছোট যমুনার ওপর নির্মিত এই সেতু এখন তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাবে বলে তারা আশা করছেন। কৃষকরা মনে করছেন, দ্রুত সেতুটির কাজ সম্পন্ন হলে তারা নিজেদের উৎপাদিত ফসল সরাসরি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন, যা আগে নদীর কারণে বাধাগ্রস্ত হতো। সেতু নির্মাণের ফলে সীমান্তবাসীর জীবনযাত্রার মান বদলে যাচ্ছে। এতদিন যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকায় মধ্যস্বত্বভোগীরা মাঠে গিয়ে বাজারদরের তুলনায় কম দামে কৃষকদের থেকে কৃষিপণ্য সংগ্রহ করতেন। এখন কৃষকরা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করতে পারছেন।
পাঁচবিবি উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন জানান, ৯০.৬ মিটার দীর্ঘ এই গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের চুক্তি মেয়াদ অনুযায়ী গত দেড় বছরে প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদের চার মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্রুত গতিতে আরও ৩০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের চুক্তি মেয়াদ অনুযায়ী সেতুটির শতভাগ কাজ শেষ হবে এবং এটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
Comments