নাগেশ্বরীতে বাড়িতে হামলা ও লুটপাট: বিচারের দাবিতে আদালতে ভুক্তভোগীর মামলা

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় রাস্তার জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সৃষ্ট এক ঘটনায় মোজাফফর হোসেন গংদের বিরুদ্ধে বাড়িতে হামলা ও প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মমতাজ বেগম বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আমলী আদালতে একটি লুটপাট মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং পিটিশন-২০২, তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিঃ।
মামলার সূত্রে জানা যায়, নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের নতুন গোবর্ধনের কুটি (কান্দুরেরহাট) গ্রামের মোজাফফর হোসেন গং এবং শেখ ফরিদ গংদের মধ্যে রাস্তার জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত ২৩ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে সকালে মোসলেম উদ্দিনের ভাতিজি খুশি আক্তার রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে শেখ ফরিদের স্ত্রী বিলকিছ বেগম তাকে মারধর করেন। খুশি আক্তারের চিৎকারে তার চাচা মোসলেম উদ্দিন এগিয়ে এলে শেখ ফরিদ, বেলাল হোসেন ও আলমগীর হোসেনের পরিবার পরিকল্পিতভাবে লাঠি দিয়ে মোসলেমের মাথায় আঘাত করে। গুরুতর আহত মোসলেম উদ্দিন গত ২৪ আগস্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
অন্যদিকে, নিহত মোসলেম উদ্দিনের পরিবার মোজাম্মেল হকের বসতবাড়ি সংলগ্ন রাস্তার ১ শতক জমি শেখ ফরিদের কাছে বিক্রির কারণে মোজাম্মেল হকের পরিবারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। ফলস্বরূপ, গত ২৪ আগস্ট আনুমানিক রাত ১০টায় মোজাম্মেল হক, আব্দুস সালাম, রাহিমুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও রোকেয়া বেগমকে হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। একই রাতে নিহত মোসলেমের পরিবার, যার নেতৃত্বে রবিউল ইসলাম, মোজাফফর, হাজর উদ্দিন, শাহাজুল, নজরুল ইসলামসহ ১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র মোজাম্মেল হকের বসতবাড়ির ৫টি ঘরের তালা ভেঙে আসবাবপত্র, বস্ত্র, স্বর্ণালংকার, ধান, চাল, জমির কাগজপত্রসহ প্রায় ২০ লাখ ৭ হাজার টাকার মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।
লুটপাটের শিকার মোজাম্মেল হক, আব্দুস সালাম, রাহিমুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও রোকেয়া বেগম বর্তমানে পরিবার নিয়ে অন্যত্র মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
লুটপাট মামলার সাক্ষী মমেনা বেওয়া, রিতা খাতুন, এরিনা খাতুন ও খোরশেদ আলী জানান, মোজাম্মেল হক রাস্তার ১ শতক জমি প্রতিবেশী শেখ ফরিদের কাছে কেনার কারণে নিহত মোসলেমের পরিবার মোজাম্মেল হকসহ ৫ জনকে হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয় এবং মোজাম্মেলের বসতবাড়ির ৫টি ঘরের তালা ভেঙে আসবাবপত্র, বস্ত্র, স্বর্ণালংকার, ধান, চাল, জমির কাগজপত্র লুটপাট করে।
লুটপাট মামলার বাদী মমতাজ বেগম বলেন, "নিহত মোসলেমের পরিবার অন্যায়ভাবে আমার বাবা মোজাম্মেল হকসহ ৫ জনকে হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে আমাদের বসতবাড়ির ৫টি ঘরের তালা ভেঙে প্রায় ২০ লাখ ৭ হাজার টাকার আসবাবপত্র, বস্ত্র, স্বর্ণালংকার, ধান, চাল, জমির কাগজপত্র লুটপাট করেছে। এই ঘটনায় রবিউল ইসলাম, মোজাফফর, হাজর উদ্দিন, শাহাজুল, নজরুল ইসলামসহ ১২ জন জড়িত।"
এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম রেজা বলেন, "আদালত থেকে লুটপাট মামলার কাগজ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।"
Comments