গণমাধ্যম ও পুলিশের সহযোগিতায় পথশিশু আব্দুল খালেক ফিরলো আপন নীড়ে
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার (এসপি) ও গণমাধ্যমের আন্তরিক প্রচেষ্টায় অবশেষে পরিচয় শনাক্ত হলো পথশিশু আব্দুল খালেক (১২)-এর, এবং সে তার মায়ের কোলে ফিরে যেতে সক্ষম হয়েছে। আজ ৩০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে তার পরিবারের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
গত কয়েকদিন আগে চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ট্রেন থেকে পড়ে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল এই পথশিশুকে। তাকে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির নাম প্রাথমিকভাবে অনিক জানা গেলেও পরে তার আসল নাম আব্দুল খালেক বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। তার বাড়ি খুলনার ইউনিভার্সিটি এলাকার পেছনে। গণমাধ্যমে এ বিষয়ে খবর প্রচারিত হওয়ার পরই বিষয়টি নজরে আসে।
পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম-সেবা-এর মানবিক নির্দেশনায় শুরু হয় শিশুটির পরিচয় শনাক্তকরণের কাজ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর দেখে ও পেয়েই বাগেরহাট মোংলা থেকে আব্দুল খালেকের মা জেসমিন বেগম টুনি (৩৫) এবং তার চাচি মোছা. লিপি বেগম নড়াইল লোহাগাড়া থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জীবিত অবস্থায় পেয়ে আপ্লুত হয়ে যান।
শিশুটির মা জেসমিন বেগম জানান, "আমরা খুব গরিব মানুষ। আমার ছেলেটা কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ ছিল, অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় আমরা আমাদের সন্তানকে খুঁজে পাই। আমরা এতটাই অসহায় যে হাসপাতালে আসার ভাড়াও জোগাড় করতে কষ্ট হয়েছে।" এই মানবিক উদ্যোগের জন্য তিনি পুলিশ সুপারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি) চুয়াডাঙ্গার সদস্যরা সার্বিক বিষয়ে দেখভাল করেন। চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা কর্তৃক শিশুটির পরিবারকে নগদ ১৫ হাজার টাকা চিকিৎসার জন্য প্রদান করা হয়। এছাড়াও, সমাজসেবা কর্মকর্তা কর্তৃক যাতায়াত বাবদ নগদ ৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, জেলা বিশেষ শাখা (ডিএসবি)-এর সদস্যবৃন্দ এবং গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে শিশুটিকে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারকে খুলনা মেডিকেল কলেজে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।




Comments