Image description

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় বিএনপির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক দলের কমিটি গঠনে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে আহ্বায়ক বদিরুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীরা বলছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন পদ দেওয়ার কথা বলে তাঁদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হলেও তাঁদের কমিটিতে রাখা হয়নি। টাকা ফেরত চাওয়ার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গাবালী উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক বদিরুজ্জামান জুয়েল ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদ দেওয়ার কথা বলে একাধিক নেতা-কর্মীর কাছ থেকে টাকা নেন। পরে ঘোষিত কমিটিতে ওই নেতাদের রাখা হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা টাকা ‘সুদসহ’ ফেরত দাবি করেন।

উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের শ্রমিক দলের কর্মী আমিনুল ইসলাম ওরফে জুয়েলের সঙ্গে বদিরুজ্জামানের কথোপকথনের একটি অডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বদিরুজ্জামানকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তো পারি নাই, এখন কী করব, আপনার জিনিস (টাকা) রাইখা লাভ আছে?’ উত্তরে পদবঞ্চিত আমিনুল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার টাকা দুই বছর কেন রাখছেন? আপনি এখন কত টাকা ফেরত দিছেন?’ জবাবে বদিরুজ্জামান বলেন, ‘আমি ১০ হাজার টাকা দিছি।’ অমনি ক্ষুব্ধ স্বরে আমিনুল বলেন, ‘চালিতাবুনিয়া থেকে যে টাকা দিছি, সে টাকা কই, সে টাকাও সুদাসলে ফেরত দিতে হবে।’ তখন বদিরুজ্জামানকে শোনা যায়, ‘সে টাকাও কি চান? সুদাসলে কত টাকা চান, আমাকে বলেন আমি দিয়ে দেব। হিসাব করে আমাকে জানান, আমি দিয়ে দেব।’

শ্রমিক দলের কর্মী আমিনুল ইসলাম বলেন, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি বানানোর কথা বলে তাঁর কাছে থেকে ২০ হাজার টাকা নেন বদিরুজ্জামান জুয়েল। চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক বানানোর আশ্বাস দিয়ে আরও দুই ব্যক্তির কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা আদায় করেন। এরপর কমিটিতে অরাজনৈতিক লোকজনকে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

পদবঞ্চিত যুবদল কর্মী মাসুদ হাওলাদার অভিযোগ করেন, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক বানাতে তাঁর কাছ থেকে ৪৭ হাজার টাকা নিয়েছেন বদিরুজ্জামান। পরে যোগ্যতা নেই এমন ব্যক্তিকে ওই পদে বসানো হয়। সে কারণেই তিনি টাকা ফেরত দাবি করেছেন।

উপজেলা যুবদল কর্মী সাকিল মাহামুদ জানান, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বানাতে তাঁর কাছ থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন বদিরুজ্জামান। এ ছাড়া দলীয় কর্মসূচিতে খরচের কথা বলে আরও দুই লাখ টাকা নেওয়া হয়। তবুও তাঁকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি।

অভিযোগকারীরা বলেন, নতুন কমিটি ঘোষণার পর তাঁরা বদিরুজ্জামানকে ফোন দিলে তিনি অপারগতার কথা জানান। পরে যুবদলের এক নেতার মধ্যস্থতায় বসাবসি হলে চাপের মুখে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন এবং ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ সম্পর্কে উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. বদিরুজ্জামান বলেন, ‘জেলায় অনুষ্ঠিত দলীয় কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের নিতে লঞ্চ ভাড়া বাবদ তাঁদের কাছ থেকে টাকা ধার নেওয়া হয়েছে। এখন এটাকে অন্য খাতে নিয়ে আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’