Image description

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিএনপির ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা, অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ এবং একাধিক দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দৌলতপুর সরকারি মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি দৌলতপুর বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী মিছিলে অংশ নেন এবং ভাঙচুর ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে "ঐক্যবদ্ধ হও, গণতন্ত্র রক্ষা করো" এমন নানা স্লোগান দেন।

নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লার নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার পরপরই বাচ্চু মোল্লার সমর্থকরা আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ এবং "ভুয়া, ভুয়া" স্লোগান দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

তবে ওই রাতেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, একই রাতে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব রেজাউর রহমান মাসুমের বাড়ির সামনে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যার ফলে বাড়ির আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এছাড়াও দৌলতপুর উপজেলার আরও তিনটি বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুরের সময় বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং ধানের শীষ প্রতীকসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দলীয় নেতাকর্মীদের ওপরও বিভিন্নভাবে হুমকি ও গালাগাল দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

তারা অভিযোগ করেন, ঢাকা উত্তর মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক ও কুষ্টিয়া-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী শরিফ উদ্দিন জুয়েলের সমর্থক হওয়ায় তাদের উপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর দলে বিভাজন সৃষ্টি করা এবং এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা।

উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব রেজাউর রহমান মাসুম বলেন, "আমার বাড়ির সামনে একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আমার পরিবারের সবাই আতঙ্কে রয়েছে। এভাবে ভয় দেখিয়ে কেউ আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।"

বিক্ষোভ মিছিলে উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। তারা অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে হুঁশিয়ারি দেন যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা হলে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এদিকে, ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রার্থী ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলই এই সহিংসতার মূল কারণ।