Image description

হবিগঞ্জের মাধবপুরে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে তীব্র জনবল সংকট। কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ঘাটতিতে শিক্ষা কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ৬টি সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার (এপিও) মধ্যে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র দু’জন। অফিস সহকারীর দুটি পদ শূন্য, হিসাব সহকারী ও অফিস সহায়ক পদেও কেউ নেই। ফলে অফিসের নিয়মিত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে বাইরের বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক ও অফিস সহায়ক এনে অফিসের কাজ চালাতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মাধবপুরে মোট ১৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ১১৪ জন প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে থাকলেও ৩৪টি বিদ্যালয় চলছে চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের হাতে। স্থায়ী প্রধান শিক্ষক আছেন মাত্র ৮০ জন। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত সংখ্যা ৮৪৮ হলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ৭৮৮ জন। ফলে ৬০টি পদ শূন্য থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে।

অনেক বিদ্যালয়ে ৫০-৬০ শিক্ষার্থীর জন্য ৬-৭ জন শিক্ষক থাকলেও কোথাও কোথাও ৪০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র ৪-৫ জন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চালানো হচ্ছে। এতে মানসম্মত শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ছয়টি সহকারী কর্মকর্তার মধ্যে চারটি পদ শূন্য থাকায় ছয়টি ক্লাস্টারের তদারকিতে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। স্কুল পরিদর্শন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার মান উন্নয়ন কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম জাকিরুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, “মাধবপুরে ১৪৯টি বিদ্যালয় ছয়টি ক্লাস্টারে বিভক্ত। প্রতিটি ক্লাস্টারে একজন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা থাকা দরকার, কিন্তু এখন দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র দু’জন। এত বড় এলাকা সীমিত জনবল দিয়ে তদারকি করা খুবই কষ্টকর। শূন্য পদগুলো পূরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দিয়েছি।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে বিদ্যালয় পরিদর্শন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার মান উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দ্রুত পদ পূরণ না হলে প্রাথমিক শিক্ষার মান আরও নিচে নেমে যাবে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মুজিবুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, ‘শিক্ষা খাতে জনবল সংকট একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। আমরা বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরেছি। আশা করছি, শূন্য পদগুলো দ্রুত পূরণ হবে।’