লিবিয়ায় এক বাংলাদেশী প্রবাসীকে অপহরণ করে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মানব পাচারকারী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তারকৃত আসামি খন্দকার রিফাত হোসেন (২৬), টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল থানার কামুটিয়া গ্রামের খন্দকার রমজানের ছেলে।
বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান। এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার গেন্ডারিয়া থানা এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের মার্চে অবৈধ পথে লিবিয়ায় যান রিফাত। সেখানে একটি কফিশপে চাকরি করার সময় লিবিয়ান মাফিয়া আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ এবং পাকিস্তানি তানভীরের সঙ্গে পরিচয় ও সখ্য গড়ে ওঠে তার। ভুক্তভোগী মো. লিটন হোসেন ওরফে সুজন (২৫) লিবিয়ার একটি ওয়ার্কশপে চাকরি করার সময় রিফাতের সঙ্গে পরিচিত হন।
ইতালি যাওয়ার ইচ্ছা ও টাকা সঞ্চয়ের বিষয়টি জানতে পেরে রিফাত মাফিয়াদের সহায়তায় ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সুজনকে একটি সুপার মার্কেটের সামনে থেকে জোরপূর্বক অপহরণ করেন। তাকে রিফাতের বাসায় নিয়ে হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয় এবং প্রথমে ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ৭২ হাজার দিনার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা) নেওয়া হয়। এছাড়া আনু আক্তারের নামীয় অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি নারিন্দা শাখার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আরও ৫ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়। এভাবে সুজনকে দুই মাস ২০ দিন আটকে রেখে অতিরিক্ত টাকা দাবি করা হয়।
ভুক্তভোগীর মামা বাদী হয়ে রিফাতের শশুর-শাশুড়িকে আসামি করে মামলা দায়ের করলে চক্রটি ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল সুজনকে মুক্তি দেয়।
নোয়াখালী পিবিআই পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান জানান, মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য রিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আসামি ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, রিফাত লিবিয়ায় বিভিন্ন দেশের মাফিয়া চক্রের সঙ্গে মিলে ইতালি গমনেচ্ছু নিরীহ বাংলাদেশীদের অপহরণ করে বাংলাদেশ থেকে মুক্তিপণ আদায় করত। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।




Comments