Image description

প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৬৭ বছর পর প্রথমবারের মতো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। ২৫ শয্যাবিশিষ্ট এই বিশেষায়িত ওয়ার্ডটি চালুর ফলে উত্তরবঙ্গের মানসিক রোগীরা এখন থেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে উন্নত চিকিৎসা সেবা নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

হাসপাতালটির পুরাতন আইসিইউ ভবনে নতুন এই ওয়ার্ডটি স্থাপন করা হয়েছে। এখানে মোট ২৫টি শয্যার মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য ৭টি, শিশু-কিশোরদের জন্য ৫টি এবং জরুরি বা ‘উচ্চ পর্যবেক্ষণ’ (High Observation)-এর জন্য ৩টি শয্যা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।

এছাড়া রোগীদের জন্য থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মোস্তফা আলী।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রামেক হাসপাতালের সদ্য বিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ওয়ার্ডের উদ্বোধন করেন। এ সময় হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আগামী মার্চে ‘ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন’ (ডব্লিউএফএমই)-এর একটি প্রতিনিধিদল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড না থাকলে কলেজের আন্তর্জাতিক অ্যাক্রেডিটেশন বা স্বীকৃতি পেতে সমস্যা হতো, যা শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার পথ রুদ্ধ করতে পারে।

এছাড়া এফসিপিএস ও ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই ওয়ার্ডটি জরুরি ছিল। এসব বিষয় বিবেচনা করে দ্রুততম সময়ে এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য কোনো ওয়ার্ড ছিল না, এটি সত্যিই অবাক করার বিষয়। প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি।’

উল্লেখ্য, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে হাসপাতালটিকে রোগীবান্ধব করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। এর আগে গত ২৩ অক্টোবর তিনি সাপে কাটা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করেন, যেখানে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালকের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।