নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার স্ত্রী ‘শ্রেষ্ঠ অদম্য নারী’: সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড়
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এক নেতার স্ত্রীকে ‘শ্রেষ্ঠ অদম্য নারী’র পুরস্কার দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
পুরস্কৃত ওই নারীর নাম শারমিন আক্তার। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়ন শাখার সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুনের স্ত্রী।
গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শারমিন আক্তারের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মং এছেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জানা যায়, শারমিন আক্তার বেশ কয়েক বছর ধরে কাপড়ে হ্যান্ড পেইন্টিংয়ের কাজ করছেন। এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ‘অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী নারী’ ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ‘শ্রেষ্ঠ অদম্য নারী’ হিসেবে মনোনীত করা হয়। অনুষ্ঠানে তিনি ছাড়াও ‘শ্রেষ্ঠ জননী নারী’ ক্যাটাগরিতে ইয়াছমিন আক্তার এবং ‘নির্যাতনের দুঃস্বপ্ন মুছে জীবন সংগ্রামে জয়ী নারী’ ক্যাটাগরিতে রিনা আক্তারকে পুরস্কৃত করা হয়।
তবে বিতর্কের সৃষ্টি হয় শারমিনের স্বামীর রাজনৈতিক পরিচয় এবং পুরস্কার প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় এক স্থানীয় সাংবাদিকের সম্পৃক্ততা নিয়ে। পুরস্কার পাওয়ার পর বিজয়ীরা ফেসবুকে স্থানীয় এক সাংবাদিককে ম্যানশন করে ধন্যবাদ জানালে নেটিজেনরা প্রশ্ন তোলেন মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ওই সাংবাদিকের ভূমিকা কী ছিল?
আমির হোসেন নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, ‘চরম্বা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির স্ত্রীকে দেওয়া হলো অদম্য নারী পুরস্কার। ২০২৪ সালের আন্দোলনের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই কীভাবে উপজেলা প্রশাসন থেকে ছাত্রলীগের সভাপতির স্ত্রী পুরস্কার পায়? এখনো কি প্রশাসনে আওয়ামী লীগের দালালরা রয়ে গেছে? কোন সাংবাদিকের হাত ধরে এই পুরস্কারটা পেয়েছে, জাতি তা জানতে চায়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগাড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কুহেলিকা সরকার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, ‘আমি সাতকানিয়ার পাশাপাশি লোহাগাড়ায় অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। যাদের কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে, তারা হয়তো তথ্যটি গোপন করেছেন।’
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের অজ্ঞাতসারে ঘটেছে। যারা তথ্য সরবরাহ করেছেন, তারা সম্ভবত তার স্বামীর রাজনৈতিক পরিচয় গোপন করেছেন।’




Comments