সালথায় শীত উপেক্ষা করে হালি পেঁয়াজের চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষকরা
পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় ফসলি জমিতে হালি পেঁয়াজের চারা রোপণের ধুম পড়েছে। কৃষকদের প্রধান অর্থকরী ফসল এই পেঁয়াজ। এর চাষ থেকে বছরের অর্থনৈতিক চাহিদা মেটান তারা। তাই তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে ভোর থেকে মাঠে নেমে পড়েন কৃষকেরা। দল বেঁধে ব্যস্ত সময় পার করছেন পেঁয়াজ উৎপাদনের কাজে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সালথায় ১২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। ফরিদপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি হালি পেঁয়াজ চাষ হয় এ উপজেলায়। তবে গত মৌসুমে উৎপাদিত পেঁয়াজের আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় অনেক কৃষক এবার অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকেছেন।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে ভোরে মাঠে নামছেন শ্রমিকেরা। একেক জমিতে দুজন শ্রমিক হাত নাঙ্গল দিয়ে মাটি তৈরি করছেন, অন্যদিকে ২৫-৩০ জনের দল সারিবদ্ধভাবে চারা রোপণ করছেন। আরেক দল চারা উত্তোলন করে এনে দিচ্ছেন। রোপণ শেষ হলেই শ্যালো মেশিনে সেচ ও সার-ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এভাবে চলছে পুরো এলাকায় পেঁয়াজ আবাদের কর্মযজ্ঞ।
ভাওয়াল ইউনিয়নের পুরুরা গ্রামের কৃষক সিরাজ মোল্যা বলেন, “এবার ১৫ কেজি বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে ১৫ বিঘা জমিতে রোপণ করছি। প্রতি বিঘায় খরচ ২৫-৩০ হাজার টাকা। কিন্তু বাজারে দাম কম থাকলে লোকসান হবে। আশা করি এবার ভালো ফলন ও দাম পাব।”
সালথা গ্রামের কৃষক আবু মোল্লা বলেন, “আমাদের এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ পাট ও পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল। এ দুটি ফসলের দাম ভালো হলে সারা বছর ভালো থাকি। গতবার লোকসান হয়েছে, তবু ঝুঁকি নিয়ে এবারও চাষ করছি।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুদর্শন সিকদার বলেন, “সালথা পেঁয়াজের জন্য বিখ্যাত। এবার লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৩০০ হেক্টর, যা অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে চলছে হালি রোপণের কাজ। আমরা কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।”




Comments