Image description

‘তোরা আমাকে জবাই করিস না, আমাকে খড় দিয়ে ঢেকে রাখ’—ডাকাতদের পায়ে ধরে এভাবেই নিজের প্রাণ ভিক্ষা চাইলেন চা দোকানদার আমিন। তার এই আকুতির পর ডাকাতরা তাকে হাত-পা বেঁধে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে দেয়। পরে কোনোক্রমে তিনি পাড়ে উঠে প্রাণে বাঁচেন।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও গরু ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার উত্তর বাঁশবাড়িয়া এলাকার ‘এন আই এগ্রো’ খামার থেকে ১২টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল।

খামারের মালিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৮-২০ জনের একটি ডাকাত দল বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ওই খামারের টিনের বেড়া কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা অস্ত্রের মুখে খামারের মালিক ইসমাইলকে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এ সময় খামারের পাশের চা দোকানদার আমিন শব্দ পেয়ে বেরিয়ে এলে তাকেও জিম্মি করা হয়। ডাকাতরা তাকে জবাই করতে উদ্যত হলে তিনি খড় দিয়ে ঢেকে রাখার আকুতি জানিয়ে প্রাণ ভিক্ষা চান।

ডাকাতরা খামার থেকে ১৩টি গরু বের করে ট্রাকে তোলার সময় একটি গরু দৌড়ে পালিয়ে যায়। বাকি ১২টি গরু ট্রাকে তুলে নিয়ে চম্পট দেয় তারা। ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং তল্লাশি চালায়, তবে কাউকে আটক করতে পারেনি।

খামারের আরেক মালিক নজরুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘জমি বিক্রি ও ব্যাংক লোন করে আমরা দুই ভাই এই খামার দিয়েছিলাম। ডাকাতরা আমাদের প্রায় ২২-২৫ লাখ টাকার গরু নিয়ে গেছে। এর মধ্যে ৫টি গাভী ছিল যা থেকে প্রতিদিন ৪০ লিটার দুধ পেতাম। এখন আমরা পথে বসে গেছি, ব্যাংকের ঋণ কীভাবে শোধ করব জানি না।’

সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) মো. আলমগীর জানান, খবর পেয়ে পুলিশ মহাসড়কে তল্লাশি চালিয়েছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ১৮-২০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। গরু উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, মাত্র ১০ দিন আগে গত ১৯ ডিসেম্বর উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকা থেকে ২৮টি গরুসহ ট্রাক ছিনতাই হয়েছিল, যা পরে পুলিশ উদ্ধার করে। বারবার এমন ঘটনায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

মানবকণ্ঠ/ডিআর