দেশের রপ্তানি আয় টানা চার মাস ধরে পতনের দিকে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাংক খাতের সংকট এবং বৈশ্বিক চাহিদার হ্রাস এ অবস্থার মূল কারণ। বিশ্ব বাজারে পণ্যের দামের পরিবর্তন এবং দেশীয় মুদ্রার মানেও প্রভাব পড়েছে, যা রপ্তানিতে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, এই পরিস্থিতিতে বছরের শেষ পর্যন্ত ৬৩ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কঠিন হতে পারে।
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বন্ধ হয়ে যায় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিনিয়োগে খরা দেখা দেয়, গতি হারায় অর্থনীতি। এরপরও রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে কিছুটা স্থিতি ফেরে। তবে চলতি অর্থবছরে রপ্তানি আয়ে ভাটা পড়েছে।
জুলাইয়ে রপ্তানি আয় কিছুটা বাড়লেও পরের চার মাস ধরে নিম্নমুখী। সবশেষ নভেম্বরে কমেছে সাড়ে ৫ শতাংশের বেশি। আগস্টে এ হার ছিল ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৪ দশমিক ৬১ ও নভেম্বরে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। তৈরি পোশাকসহ প্রায় সব পণ্যেই নেতিবাচক অবস্থা।
বিজিএমইএ–এর পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, ‘রপ্তানির পরিমাণটা কম দেখছেন বিগত ৪ মাস ধরে। যে বায়াররা বাংলাদেশে বিজনেস করতে চায়, কিছু সুযোগ বাড়ছিল, ট্যারিফটা আমরা কীভাবে নেগোশিয়েট করলাম বা কীভাবে হবে। কিন্তু এর ভেতরে তো ইতোমধ্যে অর্ডার অলরেডি কমা শুরু করেছে। সবকিছু মিলিয়ে পরবর্তী তিন মাস একটু স্লো যাবে।’
যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির এলসিও কমেছে। ব্যাংক খাতের সংকটের কারণে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খুলতে পারছেন না অনেকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আরো দুই-তিন মাস এই নেতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে।
অর্থনীতিবিদ শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ‘যখন একটা দেশে রাজনৈতিক সরকার থাকে না। তখন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা থাকে না। দেশি বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগ করে না। সেই জায়গা থেকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটা ক্রিটিক্যাল অবস্থা পার করছে। আর বিনিয়োগের কারণেই কিন্তু আজকে রপ্তানির যে বেহাল অবস্থা তা তৈরি হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
বিশ্লেষকদের মতে, চলতি অর্থবছরের বাকি সাত মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হবে।




Comments