প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি এবং মুদ্রাবাজারে বৈদেশিক মুদ্রার যোগান ও চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখতে বাজার থেকে ডলার কেনা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব মিলিয়ে বাজার থেকে ৩ হাজার ৫৬ মিলিয়ন (৩.০৫ বিলিয়ন) ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) তিনটি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে আরও ১১ কোটি ডলার কেনা হয়েছে। ‘মাল্টিপল প্রাইস অকশন’ (এমপিএ) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এই কেনাকাটায় প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২২ টাকা ৩০ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, শুধু চলতি ডিসেম্বর মাসেই এখন পর্যন্ত ৯২ কোটি ডলার কেনা হয়েছে। অর্থবছরের শুরু থেকে (জুলাই) এখন পর্যন্ত মোট ডলার ক্রয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলারে। মূলত ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত ডলার জমা হওয়ায় মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
চলতি মাসেও প্রবাসী আয়ে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। ১ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ২১৭ কোটি ২১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের (১৯৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার) তুলনায় সাড়ে ৯ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ১ হাজার ৫২১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩১২ কোটি ডলার। অর্থাৎ, এই সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসে প্রবাসীরা রেকর্ড ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর অবস্থান, প্রবাসীদের দেওয়া নানা প্রণোদনা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে সেবার মান উন্নয়ন করায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। এর ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও স্বস্তিদায়ক অবস্থানে ফিরছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই ডলার ক্রয়ের ফলে বাজারে টাকার তারল্য বাড়বে এবং ডলারের বিনিময় হারে বড় ধরনের কোনো অস্থিরতা তৈরির সম্ভাবনা কমে আসবে।




Comments